র্যাব-৭, চট্টগ্রামের পৃথক মাদক বিরোধী অভিযানে ২০০ বোতল ফেনসিডিল এবং ৭০ কেজি গাঁজা উদ্ধার সহ ৫ জন মাদক কারবারি গ্রেফতার; মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত দুইটি গাড়ী জব্দ।
বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব এর সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদ্ঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার সহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগণের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭ চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড থানা এলাকায় পৃথক ০২টি অভিযান পরিচালনা করে ০৫ জন মাদক কারবারি'কে গ্রেফতার করতে এবং মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত ০১টি কাভার্ড ভ্যান ও ০১টি মাইক্রোবাস জব্দ করতে সক্ষম হয়। অপারেশনের বিস্তারিত নিম্নরূপঃ
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী একটি কাভার্ড ভ্যানযোগে মাদকদ্রব্য বহন করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কুমিল্লা হতে চট্টগ্রামের দিকে নিয়ে আসছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ০৪ নভেম্বর ২০২৪ইং তারিখ আনুমানিক ১৬৩০ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড থানাধীন কেএসআরএম কবির অক্সিজেন লিমিটেড এর সামনে পাকা রাস্তার উপর একটি অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করে গাড়ি তল্লাশি শুরু করে।
এ সময় র্যাবের চেক পোস্টের দিকে আসা সন্দেহজনক ০১টি কাভার্ড ভ্যান থামানোর সংকেত দিলে গাড়িটি চেকপোস্টের সামনে থামিয়ে ০২ জন ব্যক্তি গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে র্যাব সদস্যরা আসামি ১। মোঃ ওমর ফারুক (২৯), পিতা- মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, সাং- দামারখিল, থানা- ভূজপুর এবং ২। মোঃ হারুন (৪৪), পিতা- মৃত সুলতান আহম্মদ, সাং- নিউ মনসুরাবাগ ১০ নং ওয়ার্ড, উত্তর কাট্টলী, থানা- আকবরশাহ, উভয় জেলা- চট্টগ্রাম'দের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশিকালে আসামিদের দেখানো ও শনাক্তমতে কাভার্ড ভ্যানের চালকের সিটের পিছনে বিশেষ কৌশলে রক্ষিত এবং আসামিদের নিজ হাতে বের করে দেয়া মতে ০২টি প্লাস্টিকের বস্তা হতে ১৯৭ বোতল ফেনসিডিল এবং অপর একটি প্লাস্টিকের বস্তা হতে খাকী কসটেপ দ্বারা পেছানো ২০.৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার এবং মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত কাভার্ড ভ্যান সহ আসামিদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
অপরদিকে, র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী একটি মাইক্রোবাসযোগে মাদকদ্রব্য বহন করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ফেনী হতে চট্টগ্রামের দিকে নিয়ে আসছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে অদ্য ০৫ নভেম্বর ২০২৪ইং তারিখ আনুমানিক ০০০৫ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাড়বকুণ্ড এলাকার এসকেএম জুট মিলের সামনে পাকা রাস্তার উপর একটি অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করে গাড়ি তল্লাশি শুরু করে।
এ সময় র্যাবের চেক পোস্টের দিকে আসা সন্দেহজনক ০১টি মাইক্রোবাস থামানোর সংকেত দিলে গাড়িটি চেকপোস্টের সামনে থামিয়ে ০৩ জন ব্যক্তি গাড়ি থেকে তড়িগড়ি করে কৌশলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে র্যাব সদস্যরা আসামি ১। মোঃ আরিফ হোসেন (২৫), পিতা-মৃত আবু তৈয়ব, সাং- দোলন, থানা- ভূজপুর, জেলা-চট্টগ্রাম, ২। তৌহিদুল ইসলাম (৫০), পিতা- দেলোয়ার হোসেন, সাং- উত্তর ছয়ঘরিয়া এবং ৩। পেয়ার আহম্মেদ (৫৫), পিতা-শুনু মিয়া, সাং-জয়পুর, উভয় থানা-ছাগলনাইয়া, জেলা-ফেনীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশিকালে আসামিদের দেখানো ও শনাক্তমতে মাইক্রোবাসের পিছনে যাত্রী বসার স্থানে বিশেষ কৌশলে রক্ষিত এবং আসামিদের নিজ হাতে বের করে দেয়া মতে ০২টি চটের বস্তা হতে ৫০ কেজি গাঁজা এবং ০৩ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার এবং মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস সহ আসামিদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ সুকৌশলে মাদকদ্রব্য কুমিল্লা এবং ফেনী জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হতে স্বল্প মূল্যে সংগ্রহ করে পরবর্তীতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবনকারীদের নিকট অধিক মূল্যে বিক্রয় করে আসছিল। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের আনুমানিক মূল্য ১২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের এবং জব্দকৃত মাদকদ্রব্য সহ অন্যান্য আলামত সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে আসামিদেরকে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।