এম আবু হেনা সাগর,ঈদগাঁও (কক্সবাজার)
দিন বদলের যুগে আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রাম বাংলার জনপদ থেকে কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে গরু দিয়ে ধান মাড়াইয়ের নান্দনিক মহা উৎসব। ঈদগাঁওতে গরুর সাহায্যে লাঙ্গল টানা কৃষকদের এখন আর দেখা মেলেনা। বর্তমান যুগে রোপন,কাটা,মাড়াই কাজে আধুনিক যন্ত্র পাতি ব্যবহার হচ্ছে। তাই এখন পুরাতন ডিঙিয়ে নতুনত্বের দিকে এগুচ্ছেন কৃষিখাত। ঋতু চক্রের ঘূর্ণিয়মান রূপকালে গ্রামীন কৃষকরা ধান কাটার উৎসবে মেতে উঠত। দিনভর ধান কেটে বাড়িতে এনে সন্ধ্যায় মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত হয়ে উঠতো, ধান মাড়াইয়ের পর কৃষক পরিবার মেতে উঠত নবান্ন উৎসবে।
জানা যায়, কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার আওতাধীন পাঁচটি ইউনিয়নের গ্রামাঞ্চলে ধান কাটা মৌসুমে এক সময়ে বাড়ীর উঠানে গরুর গলার লাঙ্গল টেনে চারপাশেই শক্ত লাঠি দিয়ে ধান মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্তসময় পার করেছেন কৃষকসহ বাড়ীর লোকজন। মাড়াই শেষে গভীর রাত অবধি পযন্ত ধানের কাজে পরিচর্যা করতো ঘরের বৌ-ঝি-য়েরা। রোদে শুকিয়ে ধান গোলা ভর্তি করে রাখার দৃশ্য হারিয়ে যাচ্ছেন কালের বিবর্তনে। সোনালী সে সময় হারিয়ে এখন সবই স্মৃতির পাতায় যুক্ত হয়েছে।
ঈদগাঁওর প্রবীন মুরব্বী আহমদ হোসন জানান, একসময় ধান কাটারপর গ্রামে হালের গরু দিয়ে ধান মাড়াইয়ের কাজ চলতো। যাতে অংশ নিত পরিবারের নারী-পুরুষ। কিন্তু বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রপাতির প্রচলনে কৃষিতে পুরনো পদ্ধতি নেই বললে চলে। ধান কাটা এবং মাড়াইয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে নতুন নতুন মেশিন। তবে আধুনিক সভ্যতার ভিড়ে পুরানো ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে অনেকটা শখের বসে মাঝে মাঝে গরু দিয়ে ধান মাড়াইয়ের কাজ করে থাকে অনকে কৃষক।
ভাদীতলার মামুনর রশিদ নামের যুবক জানান, নিত্যনতুন ও আধুনিকতার কৃষিতে পরিবর্তন আসছে। তবে নতুন আবিষ্কারের ভিড়ে আমরা হারাতে যাচ্ছি আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি,স্বকীয় এবং সত্তাকে। আগামী প্রজন্মের কাছে এসব ঐতিহ্যকে পরিচিত আধুনিক যন্ত্রপাতির পাশা পাশি পুরনো ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার দরকার বলে মনে করেন তিনি।
মাইজ পাড়ার পেঠান নামের এক ব্যাক্তি জানান, কৃষিকে আধুনিকায়ন করার ফলে হরেক রকম যন্ত্রপাতি সাহায্যে কৃষকেরা এখন অল্প সময়ে তাদের উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে পারছেন।