ছেলেকে নিয়ে ইচ্ছে পূরণ হলো না অভিনেত্রী সীমানার
না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন মডেল-অভিনেত্রী রিশতা লাবণী সীমানা।। মঙ্গলবার (৪ জুন) ভোর ৬টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৩৯ বছর।
এদিকে এই অভিনেত্রীর প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয় মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল প্রাঙ্গণে। তার মরদেহ সেখানে নিয়ে এলে সেখানে তৈরি হয় শোকাবহ পরিবেশ। দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা অভিনেত্রীকে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সে সময় অভিনেত্রীর দুই ছেলে শ্রেষ্ঠ ও স্বর্গ সেখানে ছিল।
টিভি চ্যানেল প্রাঙ্গণ ভর্তি মানুষের মাঝেও দিব্যি ছোটাছুটি করে বেড়াচ্ছে, খেলাধুলা করছে। তাদের মা যে আর পৃথিবীতে নেই, সেটা এখনো বুঝে উঠতে পারেনি এ দুই অবুঝ শিশু। মায়ের ছবির পাশে দাঁড়িয়ে দুষ্টুমিতে মেতে ছিল তারা। বাচ্চা দুটি এখনো বোঝেনি, বোঝার কথাও নয় যে, তাদের মা আর ফিরবে না। সদ্য মা-হারা দুই বাচ্চাকে দেখে অনেকেই হয়ে উঠেছিলেন অশ্রুসজল।
জানাজার জন্য যখন গাড়ি থেকে মরদেহ নামানো হয়, শ্রেষ্ঠ বারবার দৌড়ে যেতে চাইছিল মায়ের কাছে। দেখতে চাইছিল মায়ের মুখ। মায়ের কথা জিজ্ঞেস করতেই শ্রেষ্ঠর ছোট উত্তর, মায়ের ইচ্ছে ছিল আমাকে ক্যাডেটে পড়াবে। কিন্তু মা তো মারা গেছে, আমার আর ভালো লাগছে না।
জানাজা শেষে তার মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি শেরপুর জেলা নকলা উপজেলা বাজারদি গ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা করেন স্বজনরা।
প্রসঙ্গত, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে অভিনেত্রী রিশতা লাবণী সীমানাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল গত ২০ মে। এরপর করানো হয় সার্জারি। কিন্তু আশানুরূপ কোনো উন্নতি না হওয়ায় দেওয়া হয় লাইফ সাপোর্ট। অসুস্থ হওয়ার পর থেকে সীমানা চিকিৎসাধীন ছিলেন রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে। তবে অবস্থার অবনতি হওয়ায় বুধবার (২৯ মে) অভিনেত্রীকে স্থানান্তর করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৪ দিনের দীর্ঘ লড়াই শেষে মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল ৬টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মারা যান তিনি ।
শোবিজে সীমানার পথচলা শুরু ২০০৬ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। এরপর থেকে তিনি নাটক, বিজ্ঞাপনে নিয়মিত কাজ করছিলেন। দেখা গেছে সিনেমায়ও। তবে মাঝে ২০১৬ সাল থেকে বছর ছয়েক পারিবারিক কারণে কাজ থেকে বিরতিতে ছিলেন। বিরতি কাটিয়ে গত বছর কাজে ফিরেছিলেন তিনি।