(স্টাফ রিপোর্টার)
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে প্রবল জোয়ারের চাপে বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের ও পৌর শহরের ভেরি বাঁধ ভেঙে ৫০ টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রাতে ফরিদপুর, দুর্গাপাশা, কবাই, নলুয়া,দাড়িয়াল, দুধল, গারুড়িয়া, চরামদ্দি, চরাদি,নিয়ামতি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে বেঁড়ি বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে ৫০ টিরও বেশি গ্রাম তলিয়ে গেছে।
সরেজমিনে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রোববার রাতে জোয়ারের তীব্র চাপে পৌর এলাকার তুলাতলী নদীর ভেরি বাঁধ ভেঙ্গে পৌর শহরের হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। সকাল থেকে বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বন্যার পানিতে ভেসে গেছে শত শত মাছের ঘের, ধসে গেছে কয়েকশ কাঁচা ঘরবাড়ি ও দোকানপাট, ভেঙেছে গাছপালা।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছর বন্যা বা জলোচ্ছ্বাস হলেই ভেরি বাঁধের দুর্বল অংশ ভেঙে গিয়ে চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এছাড়াও ১৪ টি ইউনিয়নের বাঁধের নিচু জায়গা ছাপিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এসব জায়গায় এলাকার মানুষ এখন চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখে, জোয়ারের পানি ও অবিরাম বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে অনেক জায়গায় বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানের বরজ ও কৃষির ব্যাপক ক্ষতিসহ মাছের ঘেরে তিন-চার ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অনেক রাস্তা পানির তোড়ে বিভিন্ন স্থানে ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। অনেক স্থানে আবার সড়কের উপরেই জাল দিয়ে মাছ শিকার করছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সড়ক গুলোর উপরেও দুই থেকে তিন ফুট পানি রয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। রান্নাঘরে পানি প্রবেশ করায় এসব এলাকার হাজার হাজর পরিবারে রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে পড়েছে।
শত শত পুকুর ও জলাশয়ের মাছ ভেসে গেছে। গবাদি পশুর ঘর ও গো-খাবার পানিতে ডুবে যাওয়ায় অনেকেই পার্শ্ববর্তী উঁচু জায়গায় গবাদি পশু সরিয়ে নিয়েছেন। এতে গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকেই আবার গবাদি পশু হাঁস মুরগি নিয়ে উচু স্থানে একই সাথে বসবাস করছে।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, উপজেলায় ১৩৫টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। গতকাল সকাল থেকে এখন পর্যন্ত পানিবন্ধি মানুষদের উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হচ্ছে।