সাদ্দাম উদ্দিন রাজ নরসিংদী জেলা
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রচারণার সময় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ সুমন মিয়াকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেলকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা ও অন্যটি দ্রুত বিচার আইনে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার (২৫ মে) দুপুরে নিহত সুমনের বাবা ও চরসুবুদ্ধি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা, অন্যদিকে রায়পুরা-৫ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ পার্থকে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে পার্থ নিজে বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করে আরেকটি দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাফায়েত হোসেন পলাশ তথ্যটি নিশ্চিত করেন। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মামলার বাদী ও সুমনের বাবা নাসির উদ্দিন বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রুবেল এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও ভূমিদস্যু। আমার ছেলের নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নিতে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
দ্রুত বিচার আইনে করা মামলার বাদী রাজিব আহমেদ পার্থ বলেন, ঘটনার দিন আবিদ হাসান রুবেল ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমনকে হত্যা করে অডিটরিয়ামে এসে আমাকে হত্যার হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার দাবি করছি।
এদিকে সুমনের আত্মার মাগফেরাত কামনায় শনিবার বিকেলে উপজেলা অডিটোরিয়ামে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করেছেন রায়পুরা-৫ আসনের সংসদ সদস্য রাজি উদ্দিন আহম্মেদ রাজু (এমপি)।
এসময় রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বলেন, অস্ত্রের শক্তি কোনো শক্তি নয়। রাজনৈতিকদের মূলশক্তি জনগণ। আমার সঙ্গে রায়পুরার জনগণ রয়েছে। আমি যদি বেঁচে থাকি, রায়পুরা থেকে সন্ত্রাসীদের উৎখাত করবো। রায়পুরাতে সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যুদের স্থান নেই। যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
অনুষ্ঠানে রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহাম্মেদ পার্থ, আমিরগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান একে এম ফজুলল করিম ফারুক, রায়পুরা চেয়ারম্যান ফোরামের সভাপতি আলামিন ভূঁইয়া মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক শ্রীনগর ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ মোরশেদ খান রাসেল, নিহত সুমনের বাবা আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গত ২২ মে (বুধবার) উপজেলার দূর্গম চরাঞ্চল পাড়াতলীতে প্রচারণায় যান তালা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া ও চশমা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পাড়াতলীর মীরেরকান্দি গ্রামের দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা মুখোমুখি হন। এ সময় তাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে চশমা প্রতীকের সমর্থকদের সরাতে সুমন মিয়ার গাড়ি থেকে শটগানের ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। এতে রুবেলের সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে সুমনের গাড়ি ভাঙচুর ও ঘেরাও করেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এক পর্যায়ে সুমন গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে বেধড়ক পিটুনী দেয় রুবেল সমর্থকরা। আহত সুমনকে তার কর্মীরা উদ্ধার করে বাঁশগাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পুলিশের সহযোগিতায় তাকে এম্বুলেন্স যোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসক সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবু জাহিদ
কপিরাইট ©২০২৩-২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত