স্কুল ছাত্রীকে ধ*র্ষণ চেষ্টার প্রতিবাদ করায়, হামলা পিতাসহ আহত ৪
বাগেরহার সদর উপজেলার এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে পাশর্^বর্তী এক বখাটের বিরুদ্ধে। এ ঘৃণিত কাজের প্রতিবাদ করায় হামলা করেছেন বলরাম দাস নামে বখাটে ও তার লোকজন। ধর্ষণ চেষ্টার শিকার স্কুল ছাত্রী অহনা রাজবংশী (১৩) বাগেরহাট সদর উপজেলার কুলিয়াদাইড় গ্রামের অনন্ত রাজবংশীর মেয়ে। সে চিরুলিয়া স্কুল এন্ড কলেজের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী।
হামলায় স্কুল ছাত্রীর পিতা অনন্ত রাজবংশী গুরুতর আহত অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ মে) বাগেরহাট সদর উপজেলার কুলিয়াদাইড় গ্রামের শ্মশানঘাট এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় অহনা রাজবংশী, তার চাচা জগদীস চন্দ্র দাস ও চাচাতো বোন চন্দনা রাজবংশী আহত হন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে স্কুল থেকে বাসায় ফিরি। এ সময় বাবা ও মা বাড়িতে ছিল না। একটু পরেই আমার পার্শ্ব^বর্তী বলরাম রায় আমাদের ঘরে ঢুকে আমার কাছে খাবার পানি চায়। এ সময় পার্শ্ব^বর্তী জয় ঘরের বাইরে দাঁড়ানো ছিল। আমি বলরামকে পানি দিলে সে আমাকে জড়িয়ে ধরে ও ফ্লোরে উপুড় করে ফেলে। বলরামের সাথে জোরাজুরিতে আমার ডাইনিং টেবিলের আঘাতে আমার ঠোঁট ফেটে যায়। পরে ডাক চিৎকার দিলে আমার চাচি ও চাচাতো বোন দ্রুত এগিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগীর চাচি কল্পনা রাজবংশী বলেন, অহনার মাতার পিতার বাড়ি যশোরে গিয়েছে ও বাবা ইজিবাইক চালাতে বাড়ির বাইরে ছিলো। দুপুর ১২টার দিকে আহনা ঘর থেকে চিৎকার দিলে আমি ও আমার মেয়ে দ্রুত হনানের ঘরের যাই। অহনাকে ঘরের ফ্লোরে চেপে ধরতে দেখি পাশর্^বর্তী বলরামকে এ সময় ঘরের বাইরে জয় দাঁড়ানো ছিল। আমরা গেলে দ্রুত তারা পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগীর চাচা জগদীস চন্দ্র দাস বলেন, আমি ঘের থেকে বাড়িতে আসছিলাম এ সময় আমার মেয়ে আমাকে দ্রুত বাড়িতে আসতে বলে। বাড়িতে আসলে বিষয়টি আমি আমার ভাইজি, মেয়ে ও স্ত্রীর কাছে ঘটনা জানতে পারি। তাকে ফোন দিলে সেও দ্রুত বাড়িতে আসে। আমরা বলরামের কাছে বিষয়টি জানতে চাই। সে জানায় আমি তার সাথে কোন খারাব কাজ করিনি। শুধু পিঠের উপর হালকা আঘাত করেছি। এঘটনায় সে উত্তেজিত হয়ে তার মামাতো ভাই মিথুন, পিতা খোকন, আপন ভাই টুটুল, ভগীরথ ও ভজনকে নিয়ে আসে।
এ সময় শ্মশানঘাট এলাকায় আমিসহ আমার ভাই অনন্ত রাজবংশীর উপর হামলা করে। এ সময় আমার মেয়ে চন্দতাকেও তারা মাথায় আঘাত করে। হামলায় আমার ভাইকে মেরে কাদার ভিতর ঢুকে রাখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এতে আমার ভাই অজ্ঞান হয়ে যায়। আমাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আমাদের উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। ভাইয়ের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য পাইক কবিরুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণ চেষ্টা ও হামলার ঘটনা শুনে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। ভুক্তভোগীর পিতা অনন্ত রাজবংশী হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন। হামলাকারী বলরামের বিরুদ্ধে এর আগেও এলাকায় এ ধরনের মামলা রয়েছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সাইদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।