হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত, ঝিনাইদহ-১ আসনের নির্বাচনে বাধা নেই
ঝিনাইদহ-১ শূন্য আসনের উপ-নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এর ফলে আগামী ৫ জুন ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনের উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণে আর কোনো বাধা নেই।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে এক প্রার্থীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা, শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও বি এম ইলিয়াস কচি
অন্যপক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব।
এর আগে এক আবেদনে ৬ মে বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ ২১ দিনের জন্য নির্বাচন স্থগিত করেন। পরে এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. নায়েব আলী জোয়াদ্দার।
ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই গত ১৬ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। আগামী ৫ জুন ভোটের তারিখ গত ২৩ এপ্রিল এই আসনের উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
গত ২৫ এপ্রিল এ তফসিল স্থগিত চেয়ে সম্পূরক আবেদন করেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম দুলাল।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-১ আসনে মোট প্রার্থী হয়েছিলেন ছয়জন।
তারা হলেন- তৃণমূল বিএনপির কেএম জাহাঙ্গীর মজুমদার (সোনালী আঁশ), জাতীয় পার্টির মনিকা আলম (লাঙ্গল), আওয়ামী লীগের আব্দুল হাই (নৌকা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আনিচুর রহমান (আম), স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম দুলাল (ট্রাক) ও মুনিয়া আফরিন (ফুলকপি)।
গত ৭ জানুয়ারি ভোটের পরদিন ঝিনাইদ-১ আসনে প্রদেয় ভোটের ৫৮ দশমিক ২৭ শতাংশ উল্লেখ করে আবদুল হাইকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
ফলাফলে আবদুল হাইয়ের প্রাপ্ত ভোট দেখানো হয় ৯৪ হাজার ৩৭৯ ভোট। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নজরুল ইসলাম দুলালের প্রাপ্ত ভোট দেখানো হয় ৮০ হাজার ৫৪৭ ভোট। ১৩ হাজার ৮৩২ ভোট বেশি পাওয়ায় আবদুল হাইকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
ঘোষিত ফলাফলে কারসাজি হয়েছে অভিযোগ তুলে পরদিনই ফলাফল বাতিল চেয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন নজরুল ইসলাম দুলাল। কাজ না হওয়ায় গত ১০ জানুয়ারি তিনি নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন।
কিন্তু কমিশন আবেদন নথিভুক্ত করে রাখলেও তা নিষ্পত্তি না করায় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ৪৯ ধারায় তিনি হাইকোর্টে নির্বাচনী আবেদন করেন।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সে আবেদনে শুনানির পর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ কারণ দর্শানোর নোটিশসহ আদেশ দেন। অন্তবর্তী আদেশে আব্দুল হাইকে বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের গেজেট দুই মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। পরে সে আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন আব্দুল হাই। শুনানির পর গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। পরে শপথ নিয়ে সংসদে বসেন আবদুল হাই।