২৪ ঘন্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানের মাধ্যমে ‘বরগুনা জেলার সদর এলাকায় চাঞ্চল্যকর ১৫ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণ’ মামলার পলাতক প্রধান আসামি খলিল ও বশির’কে রাজধানীর ডেমরা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০ ও র্যাব-০৮ এর যৌথ আভিযানিক দল।
বরগুনা জেলার বরগুনা সদর এলাকায় বসবাসকারী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী দম্পতি বরগুনা সদরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। তাদের সংসারে ১৫ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী দম্পতি প্রায়ই তাদের মেয়ে ভিকটিম (১৫)’কে বাসায় রেখে ভিক্ষাবৃত্তি করার জন্য বেরিয়ে যেত। একই এলাকায় বসবাসকারী মোঃ খলিল (৩৮), মোঃ বশির (৩৫), মোঃ কামাল (৪০), মোঃ দুলাল (৪২) এবং আকলিমা বেগম (৩৩) তাদের প্রতিবেশী হওয়ায় তাদের সবার সাথে ভিকটিমের পরিবারের সু-সম্পর্ক ছিল। প্রতিদিনের ন্যায় গত ১০/০২/২০২৪ ইং তারিখ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী দম্পতি তাদের মেয়ে ভিকটিম (১৫)’কে বাসায় রেখে ভিক্ষাবৃত্তি করার জন্য বাসা থেকে বের হয়। অতঃপর খলিলের স্ত্রী ভিকটিমকে ডেকেছে বলে খলিল ভিকটিমকে তার বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গিয়ে খলিল ভিকটিমকে বিভিন্ন প্রলোভন ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে ভিকটিমকে জোর পূর্বক একই দিনে দুইবার ধর্ষণ করে। দুলাল ভিকটিমকে ঘটনাটি কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে, যার ফলে ভিকটিম ভয়ে ঘটনাটি কাউকে জানায়নি।
গত ১৫/০২/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ ভিকটিমের অপর প্রতিবেশী দুলাল তার স্ত্রীকে মাটির চুলা সরাতে সাহায্য করার জন্য দুলালের বাসায় ডেকে নিয়ে যায়। ভিকটিম দুলালের বাসায় গিয়ে দেখে দুলারের স্ত্রী বাসায় নেই। অতঃপর দুলাল ভিকটিমের মুখ চেপে ধরে তার বাসার ভিতরে নিয়ে যায়। উক্ত বাসার ভিতরে পূর্ব হতে বশির ও কামাল উপস্থিত ছিল। ভিকটিম তাদেরকে দেখে ডাক-চিৎকার করার চেষ্টা করলে দুলাল, বশির ও কামাল সবাই মিলে ভিকটিমের মুখ চেপে ধরে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক তাকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। আসামিরা ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য ভিকটিমকে প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে
পরবর্তীতে ভিকটিমের দৈহিক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হওয়ায় ভিকটিমের পরিবারের লোকজন ভিকটিমকে তাদের পাশ্ববর্তী মা ও শিশু ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভিকটিম অন্তঃসত্তা বলে জানায়। অতঃপর ভিকটিমের পরিবারের লোকজন ভিকটিমকে জিজ্ঞাসা করলে ভিকটিম তার পরিবারকে ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের দাদি বাদী হয়ে বরগুনা জেলার বরগুনা সদর থানায় ধর্ষক খলিল, দুলাল, বশির, কামাল ও ধর্ষণে সহযোগীতা করায় খলিলের স্ত্রী আকলিমাসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে একটি গণধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০১/১২৪, তারিখ-০১/০৫/২০২৪ ইং, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সং/০৩) এর ৯(১),৯(৩)/৩০। মামলা রুজুর বিষয়টি জানতে পেরে সকল আসামিরা আত্মগোপনে চলে যা
উক্ত গণধর্ষণের ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-১০ ও র্যাব-০৮ এর একটি যৌথ আভিযানিক দল চাঞ্চল্যকর ১৫ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সকল আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ০৭ মে ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক রাত ২০:৩০ ঘটিকায় ও অদ্য ০৮ মে ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক দুপুর ১৩:০০ ঘটিকায় র্যাব-১০ ও র্যাব-০৮ এর উক্ত যৌথ আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার ডেমরা থানাধীন মোস্ত মাঝির মোড় ও একই থানাধীন ডেমরাঘাট এলাকায় একাধিক যৌথ অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর বরগুনার সদর এলাকায় ১৫ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় পলাতক প্রধান আসামি ১। মোঃ খলিল (৩৮), পিতা-মোঃ শাহজাহান, ২। মোঃ বশির হোসেন (৩৫), পিতা-মোঃ আফজাল, ইভয় সাং-পিটিআই সড়ক, থানা-বরগুনা সদর, জেলা-বরগুনা’দ্বয়কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, গ্রেফতারকৃত আসামিরা উক্ত গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি বলে স্বীকার করেছে
গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।