আসামীকে ময়মনসিংহের ত্রিশাল থেকে গ্রেফতার করলো র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ।
র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, হত্যা, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছে যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণ কর্তৃক ইতোমধ্যেই বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। র্যাব-১৪ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন হত্যা সংক্রান্ত অপরাধ কর্মকান্ড দমনের লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে হত্যার মত জঘন্য কাজ থেকে সমাজ তথা দেশকে বাঁচাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
উল্লেখ্য যে, বাদীর বসতবাড়ীর পিছনে ০১নং আসামী মোঃ নুরুল আমিন মাস্টার(৫৫), পিতা-মৃত মাইন উদ্দিন, সাং-খামারহাটি (কোণাপাড়া), থানা-পূর্বধলা, জেলা-নেত্রকোণা এর ধান ক্ষেত রয়েছে। বাদীর বাড়ীর পিছনে সীমানা বাদীর লাগানো কাঠাল গাছ, নারিকেল গাছ সহ বিভিন্ন প্রকারের ফলজ গাছ রয়েছে। উক্ত গাছের ডালপালা ১নং বিবাদী মোঃ নুরুল আমিন মাস্টার(৫৫) এর ধানক্ষেতে হেলে পড়ায় আসামিরা প্রায়শ বাদীর পরিবারের লোকজনদেরকে গালিগালাজ করে আসছিল। ঘটনার দিন গত ইং ১২/০৪/২৪ তারিখ বিকাল আনুমানিক ০৫:৩০ ঘটিকায় ০১নং আসামী মোঃ নুরুল আমিন মাস্টার এর জমির ফসলি ধানক্ষেতে বাদীর গৃহপালিত হাঁস ধানক্ষেতে নামলে ১নং আসামী রুল আমিন মাস্টার ও ২ নং আসামী আল আমিন জমিতে আসিয়া মৃত খুরশেদ আলম এর নাম ধরিয়া গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় খুরশেদ আলম ও তার ছেলে বাদী মোঃ মোমেন মিয়া হাঁস তাড়াইয়া নেওয়ার সময় খুরশেদ আলম ০১নং ও ০২নং আসামীদ্বয়কে গালিগালাজ করেতে নিষেধ করেন।
এতে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মৃত খুরশেদ আলম (৫৬) বিবাদির কথার উত্তর দিলে ১ নং আসামী মোঃ নুরুল আমিন মাস্টার (৫৫) খুরশেদ আলমকে সজোরে ঘুষি মারে এবং ২ নং আসামী আল আমিন (৩২) ভিকটিমকে ঘাড়ে ধরে সজোরে ধাক্কা মেরে জমিতে লম্বা সিমেন্টের খুঁটির উপর ফেলে দেয়। ফলে খুরশেদ আলম অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তৎক্ষনাৎ মৃত খুরশেদ আলমকে উদ্ধারপূর্বক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় ৩,৪,৫ ও ৬ নং আসামী‘সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন আসামী দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে খুরশেদ আলমসহ বাদী মোঃ মোমেন মিয়া (২৪) কে এলোপাতারি মারতে থাকে এবং হাসপাতালে নিতে বাধা প্রদান করে। আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে খুরশেদ আলমকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার সময় পথিমধ্যেই খুরশেদ আলম(৫৬), পিতা-মৃত আব্দুর রহমান, সাং-খামারহাটি(কোণাপাড়া), থানা-পূর্বধলা, জেলা-নেত্রকোণা এর মৃত্যু হয়। খুরশেদ আলম নিহতের ঘটনায় পূর্বধলা থানা এলাকাসহ সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মোঃ মোমেন মিয়া (২৪) নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১১, তারিখ-১৩/০৪/২৪, ধারা-১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩০২/৫০৬/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। ঘটনার পর থেকে আসামীরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় আত্নগোপনে ছিল।
এরই প্রেক্ষিতে, বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে অধিনায়ক র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ মহোদয়ের নির্দেশক্রমে র্যাব-১৪, সিসিপি-২, কিশোরগঞ্জ এর কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশরাফুল কবির, ব্যাটাঃ সদর এর অপারেশনস্ অফিসার অতিঃ পুলিশ সুপার জুলফিকার আলী এবং সিপিএসসি এর স্কোয়াড কমান্ডার এএসপি মুহাঃ জাহিদ হাসান এর নেতৃত্বে একটি চৌকস আভিযানিক দল ইং ২৮/০৪/২৪ তারিখ আনুমানিক ০১:৩০ ঘটিকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী আল আমিন (৩২), পিতা- মোঃ নুরুল আমিন মাস্টার, সাং-খামারহাটি(কোণাপাড়া), থানা-পূর্বধলা, জেলা-নেত্রকোণা‘কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী উল্লিখিত ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
ধৃত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করার নিমিত্তে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।