বশির আহাম্মেদ চাঁদ
(ষ্টাফ রিপোটার)
এক সময় প্রায় সকল গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতেই ছিল খানকা ঘর।
আর এই খানকা ঘর ছিল গ্রাম বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির অংশ। কিন্তু কালের বিবর্তনে এই খানকা ঘর সংস্কৃতি যেন হারিয়েই যাচ্ছে। গেস্টরুম বা ড্রয়িং রুম আদী ভার্সন খানকা ঘর এখন আর গ্রামীণ জনপদেও দেখা যায় না।
মূলবাড়ি থেকে একটু বাইরে আলাদা খোলামেলা ঘর। অতিথি, পথচারি কিংবা সাক্ষাৎপ্রার্থী এই ঘরে এসে বসেন। প্রয়োজনে এক-দুই রাত যাপনেরও ব্যবস্থা থাকে খানকা ঘরে। খানকা ঘর ছিল বাংলার অবস্থাসম্পন্ন গৃহস্থের আভিজাত্যের প্রতীক।
কাঠের কারুকাজ করা টিন অথবা শনের ছাউনি থাকত খানকা ঘর। আলোচনা শালিস বৈঠক গল্প আড্ডার আসর বসত খানকা ঘর ঘিরে। বর্ষাকালে খানকা ঘরে বসে পুঁথিপাঠ, শায়ের শুনে মুগ্ধ হতেন শ্রোতা। পথচারি একটু জিরিয়ে নিতেন।
বিপদে পড়লে রাতযাপনের ব্যবস্থা থাকত এখানে। বাড়ির ভিতর থেকে খাবার পাঠানো হতো খানকা ঘরের অতিথির জন্য।
আবাসিক গৃহশিক্ষকের (লজিং মাস্টার)খানকা ঘরেই থাকতেন।সকাল বেলা মক্তব হিসেবে ব্যবহৃত হতো খানকা ঘর। এখন আর খানকা ঘর তেমন চোখে পড়ে না। তবু গ্রামে এখনো দেখা যায় খানকা ঘর।
অনেকেই বাপদাদার ঐতিহ্য হিসেবে ধরে রেখেছেন খানকা ঘর।এখনো খানকা ঘর সংরক্ষণ করা হচ্ছে এখনো অনেক গ্রামের বাড়িতে।
পূর্ব পুরুষদের নানা স্মৃতি বিজড়িত এই খানকা ঘর সত্যিই প্রাচীনতার বার্তা বহন করে। ঈশা খাঁর আমলে কর্মচারীদের খাজনা আদায়ের জন্য অনেকগুলো খানকা ছিল এই অঞ্চলে। পরবর্তিতে আভিজাত্যের প্রতীক।