এমপি উপ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আ’লীগ নেতার খোলা চিঠি
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-বাংলাদেশের গন্ডি পেরিয়ে আজ আপনি বিশ্বনেতাদের শীর্ষস্থানে, আপনি বিশ্বমানবতার কণ্ঠস্বর। বাংলাদেশের স্বপ্ন আশা সব কিছু আপনাকে ঘিরেই। আপনি বাঙালীর আশা-আকাংখার প্রতীক, বাংলাদেশের উন্নয়নের নেতা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি শাসক নন, আপনি দেশহিতৈষী, মানবকল্যাণব্রতী। আপনি দরদী ও হৃদয়বান। আপনি আমাদের অগ্রগামী বাংলাদেশের রূপকার, পথপদর্শক। আপনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার সম্ভব করেছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আপনি দেখিয়েছেন আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা থাকলে সব কিছুই করা সম্ভব। আন্তর্জাতিক মোড়লদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পদ্মাসেতু নির্মাণ করে আপনি দেখিয়ে দিয়েছেন, আত্মপ্রত্যয় থাকলে কী না করা যায়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল পাকিস্তানি অনাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ফলে। বাংলাদেশে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি হবে না, সব ধর্মবিশ্বাসী মানুষ সমান অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে বসবাস করবে- এটা ছিল বঙ্গবন্ধুর অঙ্গীকার।
মাননীয় সভানেত্রী, আমি রেজাউল ইসলাম রাজু, আপনার একজন কর্মী। জন্মসূত্রেই আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা তাইজাল হোসেন ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন একনিষ্ঠ কর্মী। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাঁড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে জাতির জনকের স্বপ্ন-স্বাধ শেন্রী শোষণ মুক্ত সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে কাজ করে গেছেন। ১৯৭৪ সালে ঝিনাইদহ মহকুমার অন্তর্গত শৈলকুপা থানা আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট জাতির পিতার নৃশংস্য হত্যাকান্ডের পর শৈলকুপায় যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য লড়াই সংগ্রাম করেছিলেন, তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম একজন। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭৬ সালের ১৯ এপ্রিল তৎকালীন জাসদ গনবাহিনীর স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে।
আমি, স্কুল জীবন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ১৯৮৮ সালে শৈলকুপা শহর শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক, ১৯৮৯ সালে শৈলকুপা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক, ১৯৯২ সালে শৈলকুপা সরকারী ডিগ্রী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯৭ সালে শৈলকুপা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক, ১৯৯৮ সালে ইসলামী বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদস্য এবং ১৯৯৯ সালে শৈলকুপা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করি। বর্তমানে আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শৈলকুপা উপজেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।
প্রিয় নেত্রী, আমি ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসেবে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৯১-৯৬ স্বৈরাচারীনি খালেদা জিয়া বিরোধী আন্দোলন ও ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার বিরোধী আন্দোলনের প্রতিটি লড়াই সংগ্রামে জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে থেকেছি। এসময় অসংখ্যবার হামলা-মামলা, জেল-জুলুম নির্যাতনের স্বীকার হয়েছি।
মাননীয় সভানেত্রী, আমার পিতা যখন ঘাতকের হাতে হত্যার স্বীকার হয় তখন আমি মাত্র ২ বছরের শিশু সন্তান ছিলাম। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আমাকে লড়তে হয়েছে ক্ষুধা, দারিদ্রতা এবং সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে। পারিপাশির্^ক পরিস্থিতিতে ৮ বছর বয়সে আমাকে মাতৃহারা হতে হয়েছে। একজন অনাথ শিশু হিসেবে আমার চাচার আশ্রয়ে বেড়ে উঠেছি। চরম অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা সত্বেও জীবনে কখনোই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় হতে সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করেও দেশ ও মানুষের কল্যানে কাজ করার মানসে চাকুরিতে যোগদান না করে রাজনীতির সাথেই সম্পৃক্ত রয়েছি।
মাননীয় সভানেত্রী, আপনি জানেন যে, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও শৈলকুপা আসন থেকে বারবার নির্বাচিত মহান জাতীয় সংসদের মাননীয় সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। যে কারনে, সংসদীয় আসন-৮১ ঝিনাইদহ-১ শৈলকুপা আসনটি শূণ্য হয়েছে। আধুনিক, উন্নত ও স্মার্ট শৈলকুপা গড়তে উক্ত আসনে উপ নির্বাচনে আমি আপনার দলের প্রার্থী হতে ইচ্ছুক। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আমি এই আসনের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেতে আপনার বরাবর আবেদন করেছিলাম।
আপনার প্রতি আকুল আবেদন, আমার রাজনৈতিক জীবনের কর্ম তৎপরতা ও আওয়ামী লীগের প্রতি আমার পরিবারের অকৃতিম ভালোবাসা ও ত্যাগের কথা বিবেচনা করে আমাকে এই আসনের উপ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রদানে আপনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
শ্রদ্ধাসহ-
মোঃ রেজাউল ইসলাম রাজু
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
শৈলকুপা উপজেলা শাখা, ঝিনাইদহ।
মোবাইলঃ ০১৭১২১৭৫৭৯২।