ক্যাম্পাসের ছাত্র- ছাত্রীদের দেখে বহিরাগতদের ও অবাধ বিচরণ-মেলামেশা, ক্যাম্পাসের গুটিকয়েক শিক্ষার্থীদের অসচেতনতা ও অতি খোলামেলা মনোভাব পোষণ’সহ নৈতিক শিক্ষা অবক্ষয়ের কারণে দিনকে দিন অশ্লীলতার অভয়ারণ্যে পরিণত করছে হাতিরঝিল খ্যাত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)’র মফিজ লেক ও পাশের বোটানিক্যাল গার্ডেনের উন্মুক্ত স্থানটিকে।
খোলা জায়গায় তাদের এমন বিচরণ ধীরে ধীরে স্থানটিকে অশ্লীলতা চর্চাকারীদের কাছে লেক অধিক নির্ধারিত ও নিরাপদ ডেটিং স্পটে পরিণত করছে। সুযোগ পেলেই আপত্তিকর অবস্থায় জড়িয়ে পড়ছে তারা। দীর্ঘদিন ধরে এমন চিত্র প্রশ্ন তুলেছে ক্যাম্পাস অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। এতে শিক্ষার্থীদের আড্ডার স্থানটি হারাচ্ছে তার শিক্ষা বান্ধব সৌন্দর্য পাশাপাশি সচেতন শিক্ষার্থীরা এমন দৃশ্যে বিব্রতকর, ক্ষোভ ঝেড়েছেন অনেকেই।
সরজমিনে বুধবার (০৬ মার্চ) সকাল এবং বিকেলে লেক এলাকায় ঘুরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকদের কাছে এসব চিত্র হাতে আসে।
সেখানে দেখা যায়, বহিরাগত ও ক্যাম্পাসের ৮-১০ জোড়া প্রেমিক যুগল অন্তরঙ্গ অবস্থায় সময় পার করছে। লেকে প্রবেশ করতেই লেকের ডানপাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের জন্য বরাদ্দকৃত স্থানে জনৈক যুবক যুবতীর কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে।
এসময় কাছে গিয়ে পরিচয় জানতে চাইলে হকচকিয়ে উঠেন তারা এবং ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী কলেজের শিক্ষার্থী বলে তারা নিজেদেরকে পরিচয় দেন। সেখানে ক্যাম্পাসে নির্বিঘ্নে প্রবেশের কথাও জানান তারা। তার একটু সামনে আগালে দেখা যায় লেকের বেঞ্চিতে ছাতার নিচে অশ্লীলতায় মগ্ন বহিরাগত যুগল।
ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের পরিচয় বহনকারী আইডি কার্ড না থাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ভিতরে ঢুকে পরে বহিরাগতরা। ফলে এ ধরণের কর্মকাণ্ড প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আনসার সদস্যের সাথে কথা বললে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে বহিরাগতরা ঢুকে যায়। অনেকসময় ওদের চেকিং করতে গেলে তারা বিভিন্ন ছাত্রনেতার পরিচয় দিয়ে পার হয়ে যায়। আমরা এবিষয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের জানালে তারা আসার আগেই বহিরাগতরা স্থান ত্যাগ করে চলে যায়। ফলে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রায়হান নামের এক শিক্ষার্থী জানান, একসময় লেকে বসে গ্রুপ স্টাডি বা বিভিন্ন আড্ডা দেয়া গেলেও এখন বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে লেকে যেতে নিজেদের লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে পরতে হয়। লেক যেনো বহিরাগতদের আড্ডাখানা এবং অশ্লীলতায় পরিপূর্ণ।
ক্যাম্পাসের আবাসিক এলাকা এবং ডরমেটরিতে অবস্থানরত একাধিক শিক্ষক জানান, পূর্বে সকালে বিকেলে দুইবেলা হাঁটতে বের হলেও সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় লেকে যাওয়া হয় না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশকিছু উন্নয়নমূলক কাজ চলমান আছে সেজন্য যারা কর্মরত আছেন তাদের নির্দিষ্ট করে চেনার কোনো উপায় নাই। সেজন্য বহিরাগত কেউ প্রবেশ করলেও তাকে আইডিন্টিফাই করা যায় না। আমাদের শিক্ষার্থীরা যদি আইডি কার্ড বহন করে তবে বহিরাগতদের সহজে চিহ্নিত করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, কেও যদি কাওকে কোনো আপত্তিকর অবস্থায় লেকের অভ্যন্তরে দেখতে পায় তবে তাদের ধরে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে সোপর্দ করবে। আমরা প্রক্টরিয়াল বডি তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবো।