মেহেরপুরে গাছ কর্তন করে জমি দখলের পায়তারা
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার জুগিন্দা গ্রামে বাগানের গাছ কর্তন করে জমি দখলের পায়তারা করছেন আনারুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। শনিবার (২ মার্চ), বেলা ১১ টার দিকে সরেজমিনে জুগিন্দা হাইস্কুল পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, মৃত নাসির উদ্দীন ও তিনার স্ত্রী রশিদা খাতুনের ১২ শতক জমির লেবু বাগানের অধিকাংশ লেবু গাছসহ বাগানের সীমানার মধ্যে লাগানো জেহালা ও আমের গাছ কর্তন করা হয়েছে।
এমনকি সীমানায় দেওয়া কাঁটাতারের বেড়া ও সিমেন্টের খুঁটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। যে জমিতে প্রায় ১৫ বছর পূর্বে লেবুসহ বিভিন্ন জাতের গাছ লাগিয়ে পিতামাতার জমি ভোগদখল করে আসছেন তাদের ছেলে মিজানুর রহমান। কিন্তু শুক্রবার বিকেল ও শনিবার সকালে বিভিন্ন ধরনের গাছ কর্তন করে এবং সীমানার তারকাঁটার বেড়া ও খুঁটি উপড়ে ফেলে তা নিজের জমি বলে দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে মিজানুর রহমানের চাচা আনারুল ইসলাম।
গাছ কর্তনে বাঁধা প্রদান করতে গেলে মিজানুর রহমানকে মারধরসহ দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করবে মর্মে হুমকী-ধামকী অব্যাহত রেখেছেন চাচা আনারুল ইসলাম। মিজানুর রহমান জানান, জুগিন্দা মোজার ৩৩৯ খতিয়ানের ১০১ নং দাগের ১০ শতক জমির মূল মালিক আমার বাবা নাসির উদ্দীন, চাচা আমিরুল ইসলাম, আনারুল ইসলাম ও দাউদ হোসেন। এর মধ্যে চাচা আমিরুল ইসলামের আড়াই শতক জমি মা রশিদা খাতুনের নামে ক্রয় করা ও বাবার আড়াই শতক এবং ৯৬ খতিয়ানের ১০৩ নং দাগে ১৪ শতকের মধ্যে ৭ শতক ক্রয় করা মোট ১২ শতক জমিতে লেবুসহ বিভিন্ন গাছের বাগান করা হয়েছে। গাজীপুর থেকে ফিরে আমার চাচা আনারুল ইসলাম উক্ত জমি নিজের দাবী করে তা দখলের পায়তারা করছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন ভাবে মামলা করে আমাদের হয়রানিও করা হচ্ছে।
স্থানীয় ও থানায় সালিসেও সে কোন কাগজপত্র দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ইতিপূর্বেও গাছ কর্তন করলে স্থানীয়ভাবে সমাধান হয়। অবশেষে শুক্রবার বিকেলে লোকমুখে শুনে লেবু বাগানে গিয়ে দেখি আমার চাচা আনারুল ইসলাম দা দিয়ে আমার জমির লেবু গাছ, সীমানার মধ্যে জেহালা গাছ, আম গাছ কর্তন করছে এমনকি সীমানার কাঁটাতারের বেড়া ও খুঁটি উপড়ে ফেলেছে।
আমি গাছ কর্তনে বাঁধা প্রদান করলে দা দিয়ে আমাকে কেটে জখম করবে এমনকি খুন করে ফেলবে বলে ধাওয়া শুরু করে। (এমন ভিডিও সাংবাদিকের কাছ সংরক্ষিত রয়েছে) এমতবস্থায় আমি প্রাণ ভয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এসময় আমার চাচিও বাঁশের লাঠি নিয়ে ছুটে আসে। এহেন ঘটনা স্থানীয় ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলাম ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে জানালে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেন।
মিজানুর রহমান এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে আনারুল ইসলাম বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। আনারুল ইসলামের স্ত্রী গাছ কর্তনের ঘটনা মিথ্যা বলে দাবী করেন এবং উক্ত জমি তিনার স্বামীর বলে দাবী করলেও কাগজপত্র দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। আনারুল ইসলামের মাথায় সমস্যা রয়েছে।
পাড়া প্রতিবেশী কেউ কিছু বললে তাদেরও মামলায় ফাঁসিয়ে দেন এ ভয়ে কেউ মুখ না খুললেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, নিজের একই জমি কয়েকজনের কাছে বিক্রি করে এখনও রেজিষ্ট্রেশন করতে পারেনি।
এনিয়ে গ্রামের কয়েকজনের সাথে ঝামেলা রয়েছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদেও অভিযোগ রয়েছে কিন্তু আনারুল ইসলাম হাজির হননি। ধানখোলা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, গাছ কর্তনের ঘটনা শুনেছেন বলে জানান। তবে আনারুল ইসলাম ইউনিয়ন পরিষদে ইতিপূর্বে অন্য বিষয়ে উপস্থিত না হওয়ায় গাছ কর্তনের বিষয়ে থানায় অভিযোগের পরামর্শ দিয়েছেন।