বহুল আলোচিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান হিমেলকে অপহরণের পর পাশবিক কায়দায় নির্যাতন ও মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় অপহৃতকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আর অপহরণ চক্রের মূলহোতা মালেকসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ ও ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব জানায়, ২৬ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীর উত্তরা এলাকায় বসবাসকারী কাজী হাসিবুর রহমান হিমেল শেরপুর যাওয়ার পথে অপহরণের শিকার হন। পরবর্তীতে হিমেলের পরিবার একাধিকবার তার মোবাইল ফোনে ফোন করলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে হিমেলের মা রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় নিখোঁজ সংক্রান্তে একটি সাধারণ ডায়রি করেন।
২৮ ডিসেম্বর গাজীপুরের বাসন এলাকায় পরিত্যাক্ত অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিমেলের গাড়িটি উদ্ধার করে। পরবর্তীতে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ভিকটিমের মায়ের হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে ভিকটিমকে অপহরণের বিষয়টি জানায় এবং ভিকটিমের পরিবারের কাছে ২ কোটি টাকা মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করে এবং ভিকটিমকে পাশবিক কায়দায় নির্যাতনের ভিডিও ভিকটিমের পরিবারের কাছে পাঠায়। এমতাবস্থায় ভিকটিমের মামা বাদী হয়ে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন; যার মামলা নং-০৬।
ভিকটিমের মা তার ছেলেকে উদ্ধারে র্যাবের কাছেও অভিযোগ করেন।
গত ২৩ জানুয়ারি র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-১, র্যাব-৯ ও র্যাব-১৪ এর আভিযানিক দল সুনামগঞ্জের তাহিরপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা ও পরিকল্পনাকারী আব্দুল মালেক, তার অন্যতম সহযোগী ও পরিকল্পনাকারী গাড়িচালক ছামিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার রাতে হিমেলকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থেকে উদ্ধার করা হয়। এসময় রনি নাবালকে শেরপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার ব্যাক্তিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে রাসেল মিয়া ও বিল্লাল হোসেনকে গ্রেফতার করে।
র্যাব জানায়, অভিযানে উদ্ধার করা হয় ১টি বিদেশি পিস্তল, ২ রাউন্ড গুলি ও ২টি ওয়াকিটকি সেট। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা অপহরণের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, ভিকটিম হিমেল এর বাবা ব্যাটারী বিক্রয়ের ব্যবসা পরিচালনা করতেন। ভিকটিম হাসিবুর রহমান হিমেল রাজধানীর উত্তরার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ৪র্থ বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন। ভিকটিমের বাবা ৪ মাস আগে মৃত্যুবরণ করার পর তার ছেলে ভিকটিম হিমেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি তার বাবার ব্যবসা পরিচালনা করতেন।
হিমেলকে উদ্ধারকালে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ও মানসিক বিপর্যস্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবু জাহিদ
কপিরাইট ©২০২৩-২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত