প্রধান শিক্ষককে ঘুষ না দেওয়াই শিক্ষিকার চাকরি চুতোর অভিযোগ!
কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলাধীন পান্টি ইউনিয়নের দাশবসী প্রতিষ্ঠিত বসীগ্রাম কৃষ্ণপুর মুলগ্রাম নগরকয়া (বি.কে.এম.এন) মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর বিদ্যালয়টি ২০২২ সালে এমপিওভুক্ত হয়েছে। ২৬ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, অনিয়ম, দুর্নীতি সহ নানান অভিযোগ উঠে এসেছে। সেসব অভিযোগের অনুসন্ধান পূর্বক পর্ব আকারে প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের ২য় পর্বে তুলে ধরা হলো-
ঘুষ না পেয়ে ব্যানবেজ থেকে কম্পিউটার শিক্ষিকার নাম বাদ।২০০২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিনা বেতনে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেওয়ার পরও ২ লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে না পারায় এক শিক্ষিকাকে চাকুরি থেকে বাদ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান। ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষিকার নাম সামসুন্নাহার।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সামসুন্নাহার ২০০২ সালের ১৬ আগষ্ট নিয়োগ পান। এরপর থেকে ব্যানবেজে কম্পিউটার শিক্ষক পদে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ঐ শিক্ষিকার নাম ছিল। ১৬ বছর বিনা বেতনে চাকরি করার পর চাকুরি নিয়মিত
করণের জন্য সামসুন্নাহারের কাছে ২০১৮ সালে প্রধান
শিক্ষক মিজানুর রহমান ২ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন । ঘুষের টাকা দিতে না পারায় প্রধান শিক্ষক তাকে স্কুলের ব্যানবেজ থেকে নাম বাদ দিয়ে ২০১৯ সালে তার পদে জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ব্যক্তির নাম বসিয়ে দেন। তবে সেখানেও একটি ভুল করে বসেন প্রধান শিক্ষক। একই তারিখে সামসুন্নাহার ও জাহাঙ্গীর আলমের নিয়োগ দেখানো হয়েছে ব্যানবেজে। জাহাঙ্গীর আলমের নিয়োগ তারিখ দেখানো হয় ১৬ আগষ্ট ২০০২ তারিখে। ব্যানবেজে এই পদে জাহাঙ্গীর আলমের নাম দেখানো ২০২০ সাল পর্যন্ত। এরপর ২০২১ সালে উক্ত পদে নিয়োগ দেখানো হয় আব্দুল মানিমকে। আব্দুল মানিম ১৮ জুলাই ২০০৩ তারিখে বিদ্যালয়ে নিয়োগ পেয়েছেন বলে
ব্যানবেজে দেখানো হয়। একই শিক্ষকের পদে ২০২২ সালে দেখানো আরেক শিক্ষকের নাম। ঐ শিক্ষকের নাম আমজাদ হোসেন। বিদ্যালয়ে আমজাদ হোসেনের নিয়োগ দেখানো হয় ৩১ আগষ্ট ২০০২ সালে।
এদিকে ঘুষের টাকা দিতে না পারায় চাকুরি হারানো শিক্ষিকা সামসুন্নাহার বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যা এখনো চলমান রয়েছে। এ প্রসঙ্গে সামসুন্নাহার জানান, আমি ২০০২ সাল থেকে বি.কে.এম.এন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিনা বেতনে চাকুরি করে আসছি। এই স্কুলে যোগদান করার সময় প্রধান শিক্ষক আমার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নেয়। সেই টাকা দিতে আমার জমি বিক্রয় করতে হয়েছিল। এরপর ২০১৮ সালে আবার ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন প্রধান শিক্ষক। আমার বাবা-মা ও স্বামী নেই। এই টাকা আমি কোথা থেকে দেবো। আমি বাধ্য হয়ে মহামান্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।
একাধিক পদে নিয়োগ পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক আমজাদ হোসেন জানিয়েছিলেন, এসব ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। যা করার প্রধান শিক্ষক করেছেন। তিনিই সব জানেন।
সরেজমিনে প্রতিবেদক দল বিদ্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার পর প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে তার মুঠোফোনে ফোন দিলে সে সময় তিনি বলেছিলেন- ঢাকা থেকে তদন্ত দল আসছেন। আমি তাদের সাথে আছি। পরে কথা বলবো। এরপর তিনি আর কথা বলেননি।
বি.কে.এম.এন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের আরো অনিয়ম দুর্নীতির
বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন পরবর্তী পর্বে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবু জাহিদ
কপিরাইট ©২০২৩-২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত