মাসুম শাহারিয়া
রমজানের শেষ মুহূর্তে জামাকাপড়, কসমেটিক ও জুতার দোকানে পা ফেলা দায় হয়ে যায়। দোকানে থাকা অধিকাংশ পণ্য শেষ হয়ে যাওয়ার অবস্থা।
বাড়তি চাপ সামলানো দোকানের কর্মচারীদের জন্য কষ্টসাধ্য। যে ভীড় থাকে চাঁদ রাত পর্যন্ত। তবে এবার দেখা মিলছে ভিন্ন চিত্রের। প্রতিবারের ন্যায় এবারের ইদ বাজারে মানুষের বাড়তি চাপের দেখা নেই। ভীড়ের ধরন সাদামাটা।
গতকাল মঙ্গলবার ও আজ বুধবার প্রতিবেদন তৈরির আগ পর্যন্ত আমাদের প্রতিবেদক ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে এ দৃশ্য দেখেছেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা অলস সময় পার করছেন। ক্রেতা থাকলেও বাড়তি কোন চাপ নেই তাদের।
অনেক সময় ধরে বসেই থাকছেন তারা। ক্রেতা যায় আসছে দাম বেশি হওয়ায় বেশিরভাগ চলে যাচ্ছে।
দোকানের কর্মচারীরা বলেন, প্রতিবছর শেষের দিকে চাপ সামলানো কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে। তবে এবার বাড়তি সেই চাপ নেই আমাদের। অনেকটা অন্য সময়ের মতনই বেচাকেনা হচ্ছে। এতে করে অনেক মালামাল বেঁচে যাবে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিভিন্ন স্থানে ক্রমাগত দোকান বাড়ায় বেচা-কেনা কমার একটি কারণ।
এছাড়াও মানুষ কৌশল পরিবর্তন করেছে। এবারের ইদে ব্যবসা হয়েছে রমজানের আগে ও রমজানের প্রথম দিকে। শেষ দিকে চাপ নেই। সব মিলিয়ে মালামাল উঠিয়ে বিপদে পরেছেন তারা। এছাড়াও মালামালের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বিক্রি হলেও লাভ হচ্ছে সীমিত।
ব্যবসায়ী রনি ইসলাম বলেন, প্রথম দিকে ভালো বিক্রি হয়েছে। তবে আমরা ইদ বেচাকেনার জন্য নতুন করে আবার কয়েক লক্ষ টাকার মালামাল তুলেছি। তবে বেচাকেনা অন্য সময়ের মত স্বাভাবিক।
ব্যবসায়ী আরাফাত হোসেন বলেন, দোকান বেশি ব্যবসা কম। প্রথম দিকে বেচাকেনা হয়েছে।
পরে হচ্ছে কম। ব্যবসা কম হয়নি একদম। তবে শেষ মুহূর্তের বেচাকেনার আশায় মালামাল এনে বিপদে পড়েছি। এছাড়াও আমরা এবার পণ্য কিনেছি অন্য বারের থেকে বেশি দামে।
বিক্রি করে লাভ হচ্ছে সীমিত।
এদিকে অনেকে মনে করছেন দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। শেষ দিকের ক্রেতারা মুলত খেতে খাওয়া মানুষ। এরা সবমিলিয়ে নানামুখী সমস্যায় বেশিরভাগ ইদে কেনাকাটা করছেন না।
ফলে শেষ মুহূর্তের বেচাকেনায় চাপ নেই।
ছোট ভাইয়ের জন্য জামা ক্রয় করতে এসেছেন নাজমুল ইসলাম। তবে তার জন্য কিছুই কেনা হয় নি এবার। তিনি জানালেন, আমি দিনে কাজ করে ৫০০ টাকা পায়।
সংসার চালাতে তার সবই খরজ হয়ে যাচ্ছে। প্রতিবার রমজানের শেষ দিকে পরিবারের জন্য মার্কেট করি।
তবে এবার সব মিলিয়ে কেনাকাটা করতে পারছি না সবার জন্য।