শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান পরিচালনা করে ফেনীর মহিপাল থেকে অপহৃত সিএনজি ফিলিং স্টেশনের কর্মচারীকে জীবিত উদ্ধার এবং অপহরণের মূলহোতা সহ ০৭ জন অপহরণকারী’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম। অপহরণের কাজে ব্যবহৃত একটি সিএনজি অটোরিক্সা জব্দ।
বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব এর সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদ্ঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার সহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগণের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
অপহৃত ভিকটিম রফিকুল ইসলাম (২৮) ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানার মাথিয়ারা এলাকার বাসিন্দা। সে ফেনী পৌরসভার মহিপালস্থ হাজী নজির আহম্মদ সিএনজি ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং তারিখে আনুমানিক ২২৩০ ঘটিকায় মোঃ জাহিদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে অন্যান্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে দুইটি সিএনজিতে করে সিএনজি পাম্প হতে ভিকটিমকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আনুমানিক ২২৪০ ঘটিকায় ভিকটিম তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে সিএনজি পাম্পের মালিকের মোবাইল ফোনে জানায়, জাহিদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে কয়েকজন ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে তুলে নিয়ে গেছে এবং ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চাচ্ছে। অন্যথায় তাকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করছে। উক্ত বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে পাম্পের মালিক তার ম্যানেজারের মাধ্যমে ভিকটিমের ভাইকে অবহিত করেন।
পরবর্তীতে ভিকটিমের ভাই ভিকটিম রফিকুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে অপহরণকারী মোঃ জাহিদুল ইসলামের দেয়া বিকাশ নম্বরে মুক্তিপণের ৪০ হাজার টাকা দ্রুত পাঠাতে বলে। কিন্তু রাত বেশী হওয়ায় বিকাশের দোকান বন্ধ থাকায় মুক্তিপণের টাকা পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না জানতে পারলে অপহরণকারী মোঃ জাহিদুল ইসলামের বাড়ির পাশে মুক্তিপণের টাকা পৌঁছে দিতে বলা হয়। উক্ত অপহরণের বিষয়টি ভিকটিমের ভাই তাৎক্ষণিকভাবে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের ফেনী ক্যাম্পে জানায়।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি চৌকস আভিযানিক দল শ্বাসরুদ্ধকর এক অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিমকে জীবিত উদ্ধারপূর্বক অপহরণের মূলহোতা ১। মোঃ জাহিদুল ইসলাম (২৭), পিতা- আঃ তৈয়ব, সাং- মাষ্টারপাড়া, থানা ও জেলা- ফেনী সহ অন্যান্য আসামি ২। মোঃ শরফুদ্দীন (২৭), পিতা- জালাল উদ্দিন, সাং- তেলিগ্রাম, থানা- চৌদ্দগ্রাম, জেলা- কুমিল্লা, ৩। মোঃ ফয়সাল (২৫), পিতা- মৃত আঃ রহিম, সাং- কামারচর, থানা- মুরাদনগর, জেলা- কুমিল্লা, ৪। মোঃ সোহাগ (১৯), পিতা- মোঃ আলম, সাং- পূর্ব শিলুয়া, থানা- ছাগলনাইয়া, জেলা- ফেনী, ৫। মোঃ মনিরুজ্জামান মিলন (৩৫), পিতা- মোঃ লোকমান, সাং- আকদিয়া, থানা- চৌদ্দগ্রাম, জেলা- কুমিল্লা, ৬। মোঃ সোলেমান হোসেন তামিম (২৫), পিতা- তসলিম, সাং- চরবংশি খাসেরহাট, থানা- রায়পুর, জেলা- লক্ষীপুর এবং ৭। মোঃ মিরাজ (২৯), পিতা- গিয়াস উদ্দিন, সাং- উত্তর চর মহিউদ্দিন, থানা- চর জব্বার, জেলা- নোয়াখালী’দেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এ সময় গ্রেফতারকৃতদের দেহ তল্লাশি করে তাদের নিকট থেকে ৫টি বিভিন্ন সাইজের চাকু উদ্ধার এবং অপহরণের কাজে ব্যবহৃত একটি সিএনজি জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা পরস্পর যোগসাজশে ৪০ হাজার টাকার জন্য ভিকটিম রফিকুল ইসলামকে অপহরণ করে মর্মে স্বীকার করে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।