*শরীয়তপুরের সখীপুরে বিএনপি ও যুবদলসহ সাধারণ মানুষের আতঙ্কের নাম ছিলো জিতু চেয়ারম্যান।
*মামলা,হামলা, হয়রানি, চাঁদাবাজি করে এক কালের খুচরা মাছ বিক্রেতা থেকে হয়েছেন শত কোটি টাকার মালিক।
*শরীয়তপুর ও চাঁদপুরে অগ্রযাত্রা'র অনুসন্ধানে বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
রিপোর্ট: আনিসুল ইসলাম -
শরীয়তপুরের সখীপুর থানা এলাকায় বিএনপি, যুবদলসহ সাধারণ জনগণের কাছে রীতিমতো ভয়াবহ আতঙ্কের নাম ছিলো একসময়ের খুচরো মাছ ব্যবসায়ী জিতু মিয়া ব্যাপারি। সখীপুর থানা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও চরসেনসাস ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জিতু মিয়ার অত্যাচার ও নিপীড়নের গল্প এখন নির্যাতিত বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষদের মুখোমুখি।
দলীয় প্রভাবের চরম অপব্যবহার করে মামলা,হামলা, চাঁদাবাজী, দখলবাজী করে একসময়ের দরিদ্র মাছ ব্যাপারী জিতু মিয়া গড়েছেন শত কোটি টাকার সম্পদ। তার বিরুদ্ধে দুদক,এনবিআর, ও জেলা প্রশাসনে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়লেও এসবের কোন তোয়াক্কাই করতেন না তিনি। সম্প্রতি দুদকে তার বিরুদ্ধে হওয়া একটি লিখিত অভিযোগের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য-
শরীয়তপুর ও চাঁদপুরে সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে জানা গেছে- আওয়ামীলীগের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আওয়ামীলীগ শাসনামলে ২ বার সখীপুরের চরসেনসাস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হন জিতু৷ রাজনৈতিক নেতা ও চেয়ারম্যান হয়ে জনসেবার বদলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পদ গড়ার প্রতিযোগিতা শুরু করেন একসময়ের মাছ ব্যবসায়ী জিতু। অনুসন্ধানে জানা গেছে- শরীয়তপুর সংলগ্ন মেঘনা নদীর তীরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিশাল জায়গা দখল করে বানিয়েছেন মেঘনা ব্রিক ফিল্ড, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে শরীয়তপুর টু চাঁদপুর ফেরীঘাটের ইজারাও দখলে নিয়ে ইজারার নামে ব্যপক চাঁদাবাজি করেই কোটি কোটি টাকা পকেটে ভরতেন তিনি,চরসেনসাস এলাকার বেড়াচাক্কির চরে ৭৪ একর জমি দখল করে বানিয়েছেন মাছের হ্যাচারি প্রজেক্ট, আলুবাজার ফেরীঘাট সড়কের ২ প্রান্তেই রয়েছে তার মার্কেট, চরসেনসাস ইউনিয়নে একসময়ে জিতুর টিনের বাড়ি থাকলেও এখন সেখানে কোটি টাকা ব্যায়ে শোভা পাচ্ছে চোখধাধানো ডুপ্লেক্স বাড়ি,এতো গেলো শরীয়তপুরে জিতুর সম্পত্তির ফিরিস্তি, অগ্রযাত্রা অনুসন্ধান চালিয়েছে শরীয়তপুরের অপর প্রান্তে অবস্থিত মেঘনা তীরবর্তী আরেক জেলা চাঁদপুরেও। কারণ এখানেও সম্পত্তির পাহাড় গড়ে তুলেছেন জিতু মিয়া- চাঁদপুর শহরের কোরালিয়া এলাকায় জিতু তার স্ত্রী রীনা আক্তারের নামে করেছেন ৫ তলা বিলাসবহুল বাড়ি,চাঁদপুর শহরের জামতলা রোডে রয়েছে ২ টি ১ তলা বাড়ি ও মার্কেট, একই শহরের কালীবাড়ি এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটে অবস্থিত সিটি এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকানায়ও আছেন এক কালের মাছ ব্যাপারি জিতু। শুধু তাই নয় রাজধানী ঢাকার মতিঝিলে শেয়ার মার্কেটেও কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে তার। অনুসন্ধানে জানা গেছে এসব সম্পত্তি ছাড়াও নামে বেনামে জিতুর রয়েছে আরো অঢেল গোপন সম্পত্তি। তবে সর্বশেষ ইউপি নির্বাচনকালীন আয়কর রিটার্ন দাখিলের নথিতে ধূর্ত জিতু তার মালিকানাধীন মোট সম্পত্তির ১০০ ভাগের ১০ ভাগও উল্লেখ করেননি৷ একই প্রতারণা করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথেও। তাই তাকে নোটিশও দেয়া হয় এ ব্যাপারে। মূলত, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রভাব ও চেয়ারম্যান পরিচয়ে ব্যপক চাঁদাবাজি, দখলবাজি, জনসাধারণ কে হয়রানি করতে মামলা বানিজ্য, জালিয়াতি সহ আরো নানাবিধ অপরাধের গডফাদার হয়ে এতো বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন জিতু এমনটাই জানা গেছে জনসাধারণের বক্তব্যে। তার মিথ্যা মামলা ও সন্ত্রাসী হামলায় বছরের বছরের পর বছর ধরে এলাকা ছেড়ে থাকতে হয়েছে শত শত বিএনপি,যুবদলকর্মী, ও সাধারণ মানুষদের। জানা গেছে ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর এলাকা ছেড়ে ঢাকায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সাবেক চেয়ারম্যান জিতু। অপকর্মের মাধ্যমে গড়া তার সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ঠিকানাঃ অস্থায়ী কার্যালয়ঃ হাউজিং নং – ১১১ (নিচ তলা), রোড নং-১১, ই-ব্লক, ইাউজিং এস্টেট, কুষ্টিয়া সদর, কুষ্টিয়া।
কপিরাইট © ২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত