কমিউনিটি পুলিশিং ও গ্রামীণ জনপদের মানুষের ধারনা
মোবারক হোসাইন সাঈদ ( এ্যাডভোকেট )
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিষ্ঠাতা রবার্ট পিল আধুনিক পুলিশিং ব্যবস্থারও জনক। তিনি সনাতনী পুলিশিং ব্যবস্থাকে গণমুখী (Community oriented) পুলিশিং ব্যবস্থায় রূপান্তরের পক্ষে দর্শন দিয়েছেন। তার আধুনিক পুলিশিং ব্যবস্থার মূল কথা হল, “পুলিশই জনতা এবং জনতাই পুলিশ” (The police are public and the public are police)। রবার্ট পিলের গণমুখী পুলিশিং এর মূলনীতি হতেই মূলতঃ কমিউনিটি পুলিশিং এর ধারণা আসে। কমিউনিটি পুলিশিং একটি গণমুখী (Community oriented), প্রতিরোধমূলক (Proactive) এবং সমস্যার সমাধানমূলক (Solution based) পুলিশী ব্যবস্থা ও দর্শন যা জনগণকে সম্পৃক্ত করে জনগণের প্রত্যাশা ও মতামতের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। কমিউনিটি পুলিশিং এর বৈশিষ্ট্যাবলীঃ এটি পুলিশ ও জনগণের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ নিশ্চিত করে, জনগণের নিকট পুলিশের জবাবদিহিতা নিশ্চত করা, পুলিশ ও জনগণের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা- সমঝোতা ও শ্রদ্ধা বৃদ্ধি পায়, জনগণ পুলিশী কার্যক্রম ও পুলিশের সীমাবদ্ধতা সম্বন্ধে জানতে পারে, পুলিশ ও জনগণের মধ্যে দূরত্ব কমে এবং জনগণের মধ্যে পুলিশী ভীতি ও অপরাধ ভীতি হ্রাস পায় এবং জনগণ পুলিশকে সহায়তা করার জন্য উদ্বুদ্ধ হয়, পুলিশ জনগণকে পরামর্শ ও উৎসাহ দিয়ে তাদের অনেক সমস্যা তাদের দ্বারাই সমাধানের পথ বের করার জন্য অনুঘটক হিসাবে কাজ করে। অধিকাংশ গ্রামীণ জনপদের মানুষ কমিউনিটি পুলিশিং মানে পুলিশের সাথে নিজের সম্পর্ক বৃদ্ধি পাশাপাশি নিজ এলেকায় কমিউনিটি পুলিশিং এর একটি পদ ধারন করা এটিকে মনে করে থাকে। কিন্তু তারা কমিউনিটি পুলিশিং এর অতীব গুরুত্ব বিষয়ে সম্যক জ্ঞান লাভ করতে ও আগ্রহ করে না! বরং তারা পুরো কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা নিয়েও নেতিবাচক মন্তব্য করেও ছড়িয়ে দেয় এমন কি কমিউনিটি পুলিশিং এর পদ না পেলে অারও বেপরোয়াভাবে এহেন ভ্রান্তও অমূলক ধারনা প্রচার করে। পরিশেষে, জনতাই পুলিশ এবং পুলিশই জনতা(The police are public and the public are police) নীতি সমাজে প্রতিষ্ঠা করার নামই হলো কমিউনিটি পুলিশিং। এটির সকলকে কমিউনিটি পুলিশিং বিষয়ে সম্যক জ্ঞান লাভ করতে হবে এবং বিষয়টির অত্যধিক গুরুত্ব অনুধাবন করে সে অনুসারে কাজ করলে পুলিশ এবং জনতা প্রকৃত বন্ধু হবে।