হত্যা মামলার স্বাক্ষী দেয়ায় ইউপি সদস্য নেতৃত্বে স্বাক্ষীকে কুপিয়ে গুরুতর আহত
সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলায় যুবক শহিদনুর হত্যা মামলার স্বাক্ষীগণ আদালতে স্বাক্ষী দেয়ার জেরে আসামি পক্ষের লোকজন স্বাক্ষী সাবিনুরের বাড়িতে হামলা চালিয়ে স্বাক্ষী সাবিনুরকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় বাড়িতে থাকা তিন মহিলাসহ আসামিদের হামলায় ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে গুরুতর আহত সাবিনুর মিয়া(৪০), তছলিমা খাতুন(৪২) ও হেকিমা খাতুন (৫০) কে তাহিরপুর উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ও অন্যান্য আহতদের প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
গত (১৩ অক্টোবর) শুক্রবার সকালে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগটিয়া আর্দশগ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।
এঘটনায় দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেখানে সময় আবারও সংঘর্ষে জড়িয়ে ঘটে যেতে পারে রক্তক্ষয়ী ঘটনা।
এ ঘটনায় সাবিনুরের বড় ভাই নাছির উদ্দীন বাদী হয়ে গত(১৩ অক্টোবর) শুক্রবার বিকালে তাহিরপুর থানায় ইউপি সদস্য মোশাহিদ হোসেন রানুসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৮/১০ জনকে অজ্ঞাত করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, বিগত ২০২০ সালে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে শহিদ নুর হত্যার ঘটনায় নিহতের বড় ভাই গোলাম নুর বাদী হয়ে তাহিরপুর থানায় ৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় প্রধান আসামি আব্দুল কাদির গ্রেপ্তারও হয়।
উক্ত মামলায় শহিদনুরের হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে স্বাক্ষী সাবিনুর মিয়া আদালতে সাক্ষী দেয়ায় কারনে আসামি ও তাদের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোশাহিদ হোসেন রানু নেতৃত্বে ১৫-২০জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে গত (১৩ অক্টোবর) সকালে স্বাক্ষী সাবিনুরের বাড়িতে হামলা চালিয়ে সাবিনুর মিয়াকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এসময় বাড়িতে থাকা মহিলারা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এতে মহিলাসহ ১০ জনকে গুরুত্ব আহত হয় । এ সময় তাদের চিৎকারে স্থানীয় এলাকাবাসীর এগিয়ে ইউপি সদস্য রানু ও তার লোকজন চলে যায়। পরে স্থানীয় ও তাদের পরিবারের লোকজন আহতদের উদ্ধার করে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়।
এ ব্যপারে শহীদনুর হত্যা মামলার বাদী গোলাম নুর জানান, আমার ভাইয়ের হত্যাকারীরা দীর্ঘদিন ধরে মামলার সাক্ষীদের বিভিন্ন হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে যাতে মিথ্যা স্বাক্ষী দেয়ার জন্য। ওই মামলার স্বাক্ষী সাবিনুর আদালতে স্বাক্ষী দেয়ার কারণে আসামিরা তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে স্বাক্ষী সাবিনুর ও তার দুই বোনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। কেন সাক্ষী দিল। শুধু তাই নয় মামলা তুলে নিতে বলেছে না হলে আমাকেও হত্যা করবে বলে হুমকি দেয় মোশাহিদ হোসেন রানু মেম্বার ও তার লোকজন।
এ ব্যপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মোশাহিদ হোসেন রানু বলেন, ঘটনা ঘটেছে মামলা হইছে। আদালত থেকে বিল নিয়া আইছি আর কিতা!
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী নাজিম উদ্দীন এঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে আইনগত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ, গত ২০২০ সালের ৩ মার্চ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় উপজলোর বাদাঘাট ইউনিয়নরে ঘাগটিয়া গ্রামের মৃত নবিকুলের ছেলে গোলাম কাদির মিয়ার সঙ্গে তার সৎ বোন তাছলিমার পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ ভাটোয়ারা নিয়ে বিরোধ ছিল। আর মৃত নবিকুলের ছোট ভাই নাসির উদ্দিন ভাতিজি তাছলিমার পক্ষ নেওয়ায় কারণে ভাতিজা গোলাম কাদির মিয়ার সঙ্গে নাসির উদ্দিনের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরেই সকালে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দা, কিরিচ নিয়ে দু-পক্ষের লোকজন সংর্ঘষে জড়ায়। এক পর্যায়ে গোলাম কাদির মিয়ার লোকজনের অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন নাসির উদ্দিন তার ছেলে শহিদ নুর মিয়াসহ ১০ জন। পরে স্থানীয় এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে তাহিরপুর উপজেলো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে র্কতব্যরত চিকিৎসক শহিদ নুরকে মৃত ঘোষণা করনে। নিহত শহিদনুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগটিয়া গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে।