মোঃ বিল্লাল হোসেন,
শেরপুর প্রতিনিধি ঃ
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ইউএনওসহ ৩ কর্মকর্তার নিরলস প্রচেষ্টায় আইনশৃংখলা পরিস্থতির উন্নতির পাশাপাশি প্রশাসনিক সকল দপ্তরে ফিরে এসেছে স্বচ্ছতা। কিন্তু স্বচ্ছতা ফিরাতে গিয়ে বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের চক্ষুসুল হয়ে দাঁড়িয়েছে তারা। জানা গেছে, এ ৩ কর্মকর্তার মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) অনিন্দা রানী ভৌমিক ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো,আল আমিন ।
জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিনই শতশত বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা ও ভাংচুর করে প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে। ফলে প্রশাসনের মনোবল ভেঙ্গে পড়ে। চরম অবনতি হয়ে পড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির। সার্বিক আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৫ আগষ্টের পর পর্যাক্রমে ঝিনাইগাতী উপজেলায় পদায়ন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) অনিন্দা রানী ভৌমিক, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো,আল আমিন।
তারা যোগদানের পরপরই ভেঙে পড়া আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরলসভাবে কাজ শুরু করেন। তারা যোগদানের পরপরই শত প্রতিকূলতায় ভেঙ্গে পড়া আইন শৃংখলা পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারে নিরলস ভাবে কাজ করেন তারা। জনশ্রুতি রয়েছে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের দ্বারায় বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতার ও সম্মুখীন হন ওই ৩ জন কর্মকর্তা।
এরপরেও হাল ছারেননি তারা। জানা যায়, ৫ আগষ্টের পর ওই রাজনৈতিক দলের শতশত নেতা কর্মি পাহাড় কেটে পাথর ও বালু লুটপাট শুরু করে । এলাকায় আইন শৃংখলা পরিস্থিতি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এসময় দুর্বৃত্তরা নদী নালা খাল বিল ও পাহাড় কেটে পাথর ও বালু লুটপাটে মেতে উঠে।
পরিবেশের ভারসাম্যের ক্ষতিসাধন করে প্রতিদিন অবৈধভাবে কোটি টাকা মূল্যের বালু পাথর লুটপাট করা হয়। সক্রিয় হয়ে উঠে সীমান্ত পথে মাদক পাচারকারি সিন্ডিকেট। বেড়ে যায় চোরাচালানি তৎপরতা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল ও সহকারি কমিশনার (ভুমি) অনিন্দা রানী ভৌমিকের নেতৃত্বে এসব পাথরও বালু লুটপাট বন্ধে শুরু হয় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান।
প্রশাসনের সকল কাজ ফেলে রেখে নিরলসভাবে কাজ করতে হয় তাদের। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো,আল আমিনের নেতৃত্বে মাদক নির্মুলে মাঠে নামে থানা পুলিশ। ইতিমধ্যেই মাদক নির্মুলের পথে। এ ছাড়া ওসি আল আমিন এখানে যোগদানের পর থেকেই থানা পুলিশে ফিরে এসেছে স্বচ্ছতা। এখন কোন মামলা দায়ের করতে কোন টাকা দিতে হয় না। বিনা টাকায় বিচার পাচ্ছেন অসহায় বিচার প্রার্থীরা।
ওসি আল আমিন এখানে যোগদানের পরপরই স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করে ঘোষণা দেন থানায় মামলা দায়ের করতে কোন টাকা পয়সা দিতে হবে না থানা পুলিশকে। অপর দিকে ইউএনও আশরাফুল আলম রাসেল এখানে যোগদানের পরপরই দেখা দেয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। পাহাড়ি ঢলে উপজেলায় ঘরবাড়ী রাস্তাঘাট ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।
জনপ্রতিনিধি বিহীন প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম রাসেল বিরামহীনভাবে গাড়িতে করে খাবার নিয়ে ক্ষুধার্ত পরিবারের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার পৌঁছে দেন। শীতে শীতার্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শীত বস্ত্র ও খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়ে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে আখ্যা দেন তাকে।
বর্তমানে প্রায় প্রতি রাতেই হাতি কবলিত পাহাড়ি এলাকাগুলোতে হাতি তাড়ানোর জন্য মশালে ব্যবহার করতে কেরোসিন তেল নিয়ে হাজির হচ্ছেন ইউএনও আশরাফুল আলম রাসেল। এছাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) অনিন্দা রানী ভৌমিক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেলের হস্তক্ষেপে (ভুমি) প্রশাসনে ফিরে এসেছে স্বচ্ছতা।
নামজারিসহ বিভিন্ন বিষয়ে এখন আর দিনেরপর দিন হয়রানি হতে হয় না ভুমি সেবা পেতে। সব কিছু মিলে গত ৫ আগস্টের পর ওই তিন কর্মকর্তার নিরলস প্রচেষ্টায় উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ফিরে এসেছে স্বচ্ছতা। ওসি আল আমিন বলেন প্রশাসনে স্বচ্ছতা ফিরানো আমার প্রধান দায়িত্ব।
তিনি বলেন আমি একদিনের জন্য চাকরি করতে এসেছি। পরদিন থাকার আশা নিয়ে আসিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম রাসেল বলেন চাকুরির পাশাপাশি অসহায় হতদরিদ্র মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারলে আমার কাছে আনন্দ লাগে।
বার্তাপ্রেরকঃ – মোঃ বিল্লাল হোসেন, শেরপুর।
মোবাঃ-০১৮৩১৬১৮২৮৮
তাং- ২৬/০৫/২৫ইং