কবি-মহিউদ্দীন ( শিক্ষক)ঃ
হারিয়ে গেছে সেই সুর, সন্ধ্যার পরে আর,
পড়ার গুঞ্জন ওঠে না, গাঁয়ের আঙিনার ধার।
“অমুক তো পড়ছে দেখ” – মায়ের সে ডাক,
বইয়ের পাতায় ডুবে থাকা, সে ছবি নাই।
পাঁচ কি দশ বছর আগে, কান পাতলে শোনা যেত,
কত রকম পড়ার ভঙ্গি, মনটা ভরে উঠত।
পরীক্ষার কাছে এলে, জেগে থাকত রাত,
কে কতক্ষণ পড়ছে, চলত গোপনে বাত।
পেছনের সেই ছাত্রও, পড়ত গভীর রাত,
ভোরের আলো ফোটার আগে, নতুন দিনের হাত।
এলার্ম ঘড়িটারও ছিল অন্যরকম দাম,
ঘুম ভাঙাতো রোজ সকালে, জুড়াতো পড়ার ধাম।
“শিওর সাকসেস”, “টপ ব্রিলিয়ান্ট” – কত নামের ঢেউ,
সাজেশনগুলো হাতে পেলে, শান্তি পেত কেউ।
আগের দিনের ভাই-বোনেরা, দিত কত জ্ঞান,
কোন প্রশ্নটা জরুরি, চলত চুলচেরা ধ্যান।
আজকে দেখি সব চুপ, নিঝুম রাতের আঁধার,
মোবাইলের স্ক্রিনে ভাসে, নামধারী যত আঁধার।
নেই তো পড়ার সেই আওয়াজ, নেই তো সে ব্যাকুলতা,
গেমের নেশায় মত্ত সবাই, ভুল পথেতে চলা।
পাবজি আর ফ্রি ফায়ার, টিকটকের নাচন,
বদলে গেছে ছাত্রদের, পুরনো সেই বাঁচন।
চুলের বাহার, বাজারে ভিড়, আড্ডা আর গ্রুপিং,
শিক্ষা যেন দূরে কোথাও, শুধু নিয়ম ভাঙার ক্লিপিং।
শিক্ষকের সম্মান যেন, কমেছে অনেকখানি,
তাদের নামে রটে কথা, ভরে ওঠে বিদ্বেষের বাণী।
বেয়াদবি আর নিয়ম ভাঙা, এখন যেন ফ্যাশন,
লেখাপড়ার জগৎ থেকে, দূরে তাদের মন ও মনন।
কোথায় গেল সেই তারুণ্য, কোথায় সে জ্ঞান পিপাসা?
স্মৃতির পাতায় আজও ভাসে, সোনালী দিনের আশা।
ফিরে আসুক আবার সেই, পড়ার রাতের আলো,
গ্রামের বুকে আবার উঠুক, বিদ্যার সুর ভালো।