
প্রতারণার অভিযোগে মোঃ নাসির উদ্দীন চিশতীর বিরুদ্ধে সাহিত্যিক সমাজে প্রতিক্রিয়া
সাহিত্যিক মোঃ নাসির উদ্দীন চিশতী সম্প্রতি ইচ্ছাশক্তি প্রকাশনীর মাধ্যমে তিনটি বই প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নবীন ও প্রবীণ লেখকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। প্রতারক চিশতী “অপূর্ণ ভালোবাসা,” “ইচ্ছাপূরণ সাহিত্য সাময়িক ত্রৈমাসিক ম্যাগাজিন,” এবং “চব্বিশের কবিতা” নামক তিনটি বই প্রকাশের নামে মোট ৭০ জন লেখকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছেন। এসব বইয়ের জন্য দুটি কবিতা এবং বক্স ক্রেস্টের বিনিময়ে লেখকদের কাছ থেকে ৭০০ টাকা করে এবং অতিরিক্ত কবিতার জন্য ২৫০ টাকা করে নেওয়া হয়। তবে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বইগুলো এখনো প্রকাশিত হয়নি, এবং লেখকদের সাথে তার সকল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
একটি বইয়ের পিডিএফ ফাইল তৈরি হলেও বাকি দুটি বইয়ের পাণ্ডুলিপি প্রকাশনীর কাছে জমা না দিয়েই চিশতী নিরুদ্দেশ হয়ে যান। ২০ অক্টোবর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, মেসেঞ্জার এবং ফোনের মাধ্যমে তাকে খোঁজার চেষ্টা করা হলেও তিনি সকল যোগাযোগ মাধ্যম থেকে গায়েব। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, প্রতারক চিশতী ঢাকায় অবস্থান করলেও কুমিল্লায় তার গ্রামের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রতারকের পরিচয়:
প্রতারক মোঃ নাসির উদ্দীন চিশতী একজন কবি ও সাহিত্যিক হিসেবে নবীন লেখকদের মাঝে পরিচিত। তিনি বিভিন্ন সাহিত্য গ্রুপ, পেজ, এবং প্রকাশনী প্রতিষ্ঠা করে প্রতারণা চালিয়ে আসছেন। এর আগে তিনি “সেই তুমি নেই আজ” নামে একটি যৌথ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেন এবং তার সুবাদে নবীন লেখকদের আস্থা অর্জন করেন। চিশতীর প্রতারণা নতুন নয়; অনন্যা প্রকাশনীসহ আরও কিছু প্রকাশনীর মাধ্যমেও তিনি আগেও একই ধরনের প্রতারণা করেছেন বলে জানা গেছে।
প্রকাশনী ও ভুক্তভোগীদের প্রতিক্রিয়া:
ইচ্ছাশক্তি প্রকাশনী প্রতারণার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুই দফা অনলাইন মিটিং-এর আয়োজন করে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে:
১. প্রতারকের বিরুদ্ধে অনলাইন পোর্টাল ও জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ করে সচেতনতা বৃদ্ধি।
২. ভুক্তভোগী লেখক এবং প্রকাশনী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার সিদ্ধান্ত।
৩. নতুন বই প্রকাশের জন্য কমিটি গঠন ও সম্পাদকের দায়িত্ব নির্ধারণ করা এবং দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশনা।
৪. বিভিন্ন সাহিত্য অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে চিশতির আমন্ত্রণ বাতিল করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মগুলোর সাথে যোগাযোগ।
৫. ইচ্ছাশক্তি প্রকাশনীর সকল প্ল্যাটফর্ম ও ১০টির বেশি সাহিত্য প্ল্যাটফর্ম থেকে চিশতীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা।
প্রকাশনী এবং ভুক্তভোগী লেখকরা সবাই একসাথে প্রতারকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। এই ধরনের প্রতারণা যেন ভবিষ্যতে আর না হয়, সে জন্য সাহিত্যিক সমাজকে সচেতন ও সজাগ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।