বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব এর সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার সহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগণের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ০৪ আগস্ট ২০২৪ইং তারিখে আনুমানিক ১০০০ ঘটিকায় ফেনী জেলার মহিপাল ফ্লাইওভারের নিচে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ সমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে। উক্ত কর্মসূচিতে ফেনী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ছাত্র জনতার সাথে ভিকটিম বারইয়ারহাট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছাইদুল ইসলাম (২০) অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় ফেনী সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্যের প্ররোচনায় ও নির্দেশে কতিপয় নাশকতাকারী অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ছাত্র জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এছাড়াও আসামিরা হকি স্টিক, কিরিচ, দা ও লাঠি-সোটা দিয়ে ছাত্র জনতাকে পিটিয়ে এবং ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি করে।
এ সময় ভিকটিম ছাইদুল ইসলাম প্রাণ ভয়ে দৌঁড়ে মহিপাল ফ্লাইওভারের দক্ষিণ দিকে চলে যায় এবং একপর্যায়ে আত্মরক্ষার জন্য স্টার লাইন কাউন্টার সংলগ্ন ফ্লাইওভারের উপরে উঠে শুয়ে পড়ে। আসামিগণ ফ্লাইওভারের উপরে উঠে ভিকটিম ছাইদুল ইসলাম এর শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি করায় ভিকটিম আহত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আসামীরা পুনরায় ভিকটিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠি-সোঠা, লোহার রড, রাইফেলের বাট দিয়ে পিটিয়ে ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের পিতা এবং ছাত্র-জনতা ভিকটিমকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানায় ৯৪ জন এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ১০০/১৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ০৫, তারিখ- ১৪ আগস্ট ২০২৪ ইং, ধারা- ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩০৭/ ৩০২/১১৪/৩৪, দ্য পেনাল কোড, ১৮৬০।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, সূত্রে বর্ণিত মামলার তদন্তে প্রাপ্ত আসামি মোসলেহ উদ্দিন শাকিল ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানাধীন ফেনী পৌরসভার একাডেমি রোড এলাকায় অবস্থান করছে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ২৮ অক্টোবর ২০২৪ইং তারিখে আনুমানিক ১৮৫৫ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি মোসলেহ উদ্দিন শাকিল (২৬), পিতা- মৃত এম এ গোফরান, মাতা- ফুলনাহার বেগম, সাং- মরুয়ারচর, থানা- ফেনী সদর, জেলা- ফেনী’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে উপরোক্ত নাম ঠিকানা প্রকাশ করতঃ বর্ণিত মামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এর ফেনী জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক হওয়ার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামি মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট থেকে গ্রেফতার এড়াতে ফেনী জেলার বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে আসছিল বলেও জানায়।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে তাকে ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।