ঢাকার সাভারে এক হত্যার রহস্য উদঘাটনে গিয়ে বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। সীমা নামের এক এনজিও কর্মীর মরদেহ অনুসন্ধানে গিয়ে পাওয়া গেল তোফাজ্জল হোসেন তনু নামে দেড় বছর আগে অপহৃত এক যুবকের হাড় ও মাথার খুলি।
আনন্দপুর সিটি লেনে স্থানীয় ‘মাদক সম্রাট ও সিরিয়াল কিলার’ স্বপনের নির্মাণাধীন বাড়ির একটি ফ্লোর খুঁড়ে কয়েক টুকরো হাড় ও মাথার খুলি উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এর আগে স্বপনের আরেকটি বাড়ির দেয়ালের পাশ থেকে মাটি খুঁড়ে সীমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, এভাবে মানুষ হত্যার পর মরদেহ পুঁতে ফেলতেন ‘সিরিয়াল কিলার’ স্বপন।
মঙ্গলবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান।
ডিবির কর্মকর্তারা জানান, ২ জুন সাভারের বিরুলিয়ার খনিজ নগর থেকে অপহরণ হন এনজিও কর্মী সীমা। এ ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন ঢাকা জেলা ডিবির পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোবাশশিরা হাবীব খানের নেতৃত্বে ডিবির একটি দল কাজ শুরু করে।
৬ জুন সকালে সীমা হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আসামি সাইফুলকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তার দেয়া তথ্যে ওইদিন স্বপনের বাড়ির দেয়ালের পাশ থেকে মাটি খুঁড়ে সীমা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সাইফুলের স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায়, সীমা অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা ছিলেন স্বপন । তার নেতৃত্বে সাইফুল, রেজাউল, তাইরান, আসিফ সীমাকে অপহরণের পর পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেন। এরপর মরদেহ স্বপনের বাড়ির দেয়ালের পাশে পুঁতে রাখেন।
ঘটনার সূত্র ধরে ডিবির কাছে তদন্তাধীন আরও একটি অপহরণ মামলার তথ্য পাওয়া যায়। এই তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির একটি দল অপহৃত তোফাজ্জল হোসেন তনুর মরদেহ উদ্ধারের কার্যক্রম শুরু করে। আজ সকালে সীমা হত্যার মূল হোতা সিরিয়াল কিলার স্বপনকে গ্রেফতার করা হয়।
সাভার মডেল থানাধীন আনন্দপুর সিটি লেনে অবস্থিত স্বপনের নির্মাণাধীন বাড়ির একটি ফ্লোরের ৭ ফুট গভীরে খুঁড়ে দেড় বছর আগে অপহৃত তোফাজ্জলের মরদেহের কয়েক টুকরো হাড় এবং মাথার খুলি উদ্ধার করে ডিবি।
স্বপনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তনুকে নৃশংসভাবে শ্বাসরোধে হত্যার পর মাটিচাপা দেন তিনি। তনু অপহরণের সময় যে শার্টটি পরা ছিলেন সেটিও পাওয়া যায়। এছাড়া স্বপনের কাছ থেকে পিস্তল এবং বিপুল পরিমাণ হেরোইন জব্দ করা হয়।