নেত্রকোণায় পুলিশের অভিযানে ১টি বিদেশী পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন ও ১৭ রাউন্ড গুলি, ল্যাপটপ, ওয়াকিটকি এবং জিহাদী বইসহ জঙ্গী কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি উদ্ধার। জঙ্গিদের রেখে যাওয়া ০৬টি বোমা ধ্বংস।
নেত্রকোণা থানাধীন কাইলাটি ইউনিয়নের বাসাপাড়া গ্রামে জনৈক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আব্দুল মান্নানের মৎস্য খামারে জঙ্গি আস্তানা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। উক্ত মৎস্য খামারটি অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আব্দুল মান্নানের নিকট হতে লিজ নিয়ে শাহজালাল নামক এক ব্যক্তি মৎস্য চাষ ও পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন।
গত ৫ জুন নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার একটি অভিযানে উক্ত ব্যক্তি একটি বিদেশী অস্ত্রসহ রায়পুরায় গ্রেফতার হন এবং নিজেকে ফাহিম ওরফে আরিফ নামে পরিচয় দেন। ফাহিম ওরফে আরিফ গ্রেফতারের পর উক্ত মৎস্য খামারে অবস্থানরত সদস্যরা বাড়ি এবং মৎস্য খামারের গেট তালা দিয়ে গা ঢাকা দেয়। গত ৮ জন ২০২৪ সকাল অনুমান ১১:৪০ ঘটিকায় মৎস্য খামারের মূল মালিক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আব্দুল মান্নান তার ফিশারি লিজ নেয়া ব্যক্তি অস্ত্রসহ নরসিংদী জেলা পুলিশের নিকট গ্রেফতার হয়েছেন মর্মে জানান।
তিনি আরো জানান, বর্তমানে উক্ত বাড়িতে কেউ নেই এবং খামারের মূল গেটটি বন্ধ আছে। তার নিকট হতে সংবাদ প্রাপ্তির পর পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশক্রমে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ও অফিসার ইনচার্জ নেত্রকোনা দ্রুত উক্ত স্থানে গমন করলে তারা মৎস্য খামারের বাইরের গেট তালাবদ্ধ অবস্থায় পান।
পরবর্তীতে বিধি মোতাবেক তল্লাশি করে তারা সেখানে বিদেশী পিস্তল, ২টি ম্যাগজিন, ১৭ রাউন্ড গুলি দেখতে পান ।
পরবর্তীতে ভবনের ২য় তলার একটি কক্ষের তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করে কক্ষের ভিতর ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাপ, প্রশিক্ষণ বেল্ট, হেভারস্যাক, কালো কসটেপ দিয়ে মোড়ানো বোমা সদৃশ্য বস্তুসহ আরো অনেক জঙ্গি প্রশিক্ষণ সামগ্রী দেখতে পেয়ে নেত্রকোণা জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সংবাদ দিলে পুলিশ সুপার, নেত্রকোণাসহ জেলা পুলিশের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পুলিশ সুপার, নেত্রকোণা বিষয়টি বাংলাদেশ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করার পর গতকাল ০৮ জুন রাতে এন্টি টেররিজম ইউনিটের SWAT, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
অদ্য ০৯-০৬-২০২৪ খ্রিঃ জনাব মোঃ শাহ আবিদ হোসেন, বিপিএম-বার, পিপিএম, ডিআইজি, ময়মনসিংহ রেঞ্জ, বাংলাদেশ পুলিশ, ময়মনসিংহ, জনাব আসাদুল্লাহ চৌধুরী, বিপিএম-পিপিএম, অ্যাডিশনাল ডিআইজি, এন্টি টেররিজম ইউনিট, জনাব মোঃ ফয়েজ আহমেদ, পিপিএম-সেবা, জনাব মোঃ সানোয়ার হোসেন, পুলিশ সুপার (অপারেশন), এন্টি টেররিজম ইউনিটগণের উপস্থিতিতে এন্টি টেররিজম ইউনিটের SWAT, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ দল দিনব্যাপী অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযান পরিচালনাকালে উল্লেখিত সরঞ্জামাদি ছাড়াও ল্যাপটপ, মোবাইল, রামদা, ব্যায়ামের যন্ত্রপাতি, ইলেকট্রিক করাত, বাইনোকুলার, জিহাদী বইসহ ৬টি তাজা বোমা উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের বিশেষজ্ঞ দল উদ্ধারকৃত ৬টি আইইডি (বোমা) ঘটনাস্থলে নিষ্ক্রিয় করে।
ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।