নিজস্ব প্রতিনিধি
কুষ্টিয়া পোড়াদহে মাকে হত্যার দায়ে ছেলেসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
জমি বিক্রি করে টাকা না দেওয়ায় ও
মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় কুষ্টিয়ায় গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন না মমতাজ বেগমকে। তারই ছেলে মুন্না বাবু এ জঘন্য কাজটি করেন। এ মামলায় মুন্না বাবুসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (৫ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কুষ্টিয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রুহুল আমিন আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। পরে তাদের কড়া পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে নেওয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মিরপুর থানার পোড়াদহ কাঠদহ গ্রামের মৃত ফজল বিশ্বাসের ছেলে মুন্না বাবু, ইয়াছিন আলির ছেলে রাব্বী আলামিন ও ইনছার বিশ্বাসের ছেলে আব্দুর কাদের। এরমধ্যে আব্দুর কাদের মুন্না বাবুর আপন চাচা।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি বিকেলে মিরপুর উপজেলার কাঠদহ গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন মমতাজ বেগম। এ ঘটনায় তার ভাই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মিরপুর থানায় মামলা করেন। পরে সন্দেহমূলকভাবে মমতাজের ছেলে মুন্না বাবুকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মুন্না জানান, মাদক সেবনে বাঁধা দেওয়ায় চাচা আব্দুল কাদেরের পরামর্শ ও সহযোগিতায় তিনি মাকে হত্যা করেন। পরে মরদেহ একটি বস্তায় ভরে বাড়ির পাশের পুকুরের কাঁদার মধ্যে পুঁতে রাখে। মুন্নার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ পুকুর থেকে মমতাজের মরদেহ উদ্ধার করে।
সুত্রে জানায়, কুষ্টিয়ার পোড়াদহের কাটদহে ‘মা’কে খুন করে লাশ পুতে রাখে ওই পাষন্ড সন্তান। ২৮ দিন পর বাড়ির পুকুর পাড় হতে ওই হতভাগিনী মায়ের বস্তাবন্দী লাশ করে পুলিশ। এরপর ওই কুলাঙ্গার সন্তান মুন্নাকেও পুলিশ আটক করেছে।
নিহত মহিলা পোড়াদহ দক্ষিণ কাটদহ (কাপড় হাটের পিছনে) গ্রামের ফজলের স্ত্রী মমতাজ। মাকে হত্যার এই ঘটনায় নির্বাক হয়ে যায় দেশের মানুষ। পাষন্ড ওই সন্তানের কঠোর শাস্তির দাবী করে এলাকাবাসী।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত মমতাজ মাসখানেক ধরে নিখোঁজ ছিল। নিহতের জামাতা মিরপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী করার পরে কুষ্টিয়ার ডিবি পুলিশ তদন্ত সাপেক্ষে রাব্বি নামে একজনকে আটক করে। পরে তার জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে প্রায় মাসখানেক আগে তার বন্ধুর মাকে খুন করেছে তারই আপন ছেলে মুন্না।
পরে তার মায়ের লাশ বাড়ির পাশে পুকুরে মাটি খুড়ে পূঁতে রাখেন। এরপর থেকে আপন সন্তান মায়ের নামে গুজব রটায় তার মা পরপুরুষের হাত ধরে চলে গেছে ।
মঙ্গলবার দুপুরে তদন্ত সাপেক্ষে ও স্বীকারোক্তি মূলক কথায় ঘটনাস্থল ডিবি পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে ডিবি পুলিশের ওসি আমিনুল ইসলাম জানান মিরপুর থানায় মমতাজ নামে একজন নিখোঁজ হওয়া সাধারণ ডায়েরী হয়। এরপর তদন্ত সাপেক্ষে ডিবি পুলিশ রাব্বি নামে একজনকে আটক করে। পরে তার জিজ্ঞাসাবাদের পর নিহতের ছেলেকে আটক করে। আটকের পরই হত্যাকৃত মায়ের লাশের সন্ধান পান ডিবি পুলিশ। তার সন্তানই বন্ধুদের সাথে করে মাকে হত্যা করে লাশ বাড়ীর পাশে পুকুর ধারে পূঁতে রাখেন। পুলিশ ওই লাশ উদ্ধার করে।