বগুড়ার শহরের বনানি এলাকায় ‘শুভেচ্ছা’ নামে একটি আবাসিক হোটেলে মা ও ছেলের গলাকাটা লাশ পাওয়া গেছে। মা কুড়ি বছর বয়সী আশা মনির লাশ হোটেলের বাথরুমের ভেতরে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়েছিল। আর তার ১ বছর বয়সী ছেলে আব্দুল্লাহ্ আল রাফির মাথাবিহীন লাশ বস্তায় ভরে খাটের নিচে রাখাছিল। শনিবার সকাল ১১টার দিকে পুলিশ দুটি লাশ উদ্ধার করে।
ওই জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ আজিজুল হক নামে এক সেনা সদস্যকে আটক করেছে। আজিজুল হক নিহত আশামনির স্বামী। তার বাড়ি বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া। নিহত শিশুর মাথার সন্ধানে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে। তবে দুপুর পৌনে ২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তা উদ্ধার করতে পারেনি।
শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল হক হত্যাকাণ্ডÐে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
পুলিশ ও হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, সেনা সদস্য আজিজুল হক চট্টগ্রাম সেনানিবাসে কর্মরত।
নিহত আশামনির ভাই শহরের নারুলী এলাকার বাসিন্দা মেহেদি হাসান সনি জানান, সেনা সদস্য আজিজুল হকের সঙ্গে প্রায় তিন বছর আগে তার বোনের বিয়ে হয়। দুই মাসের ছুটি নিয়ে সে কিছুদিন আগে বগুড়ায় আসে। এরপর তার ভগ্নিপতি আজিজুল গত বৃহস্পতিবার শহরের নারুলি এলাকায় শ^শুর বাড়িতে বেড়াতে আসে। তিনি বলেন বেড়ানোর কথা বলে আজিজুল হক তার বোন ও ভাগ্নেকে নিয়ে শনিবার বেড়িয়ে পড়ে।
শুভেচ্ছা হোটেলের ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর আজিজুল হক তার স্ত্রী ও এক বছর বয়সী সন্তানকে নিয়ে দোতলার একটি কক্ষে ওঠেন। এরপর রাত ১১টার দিকে তিনি হোটেল থেকে বের হয়ে যান।
তিনি বলেন, আজ (রবিবার) সকাল ১১টার দিকে আজিজুল হক হোটেলে কক্ষের ভাড়া পরিশোধ করতে আসেন। কিন্তু তখন তার সঙ্গে স্ত্রী ও সন্তান না থাকায় আমাদের সন্দেহ হয়। এরপর আমরা তাকে আটক করে পুলিশে খবর দিই। পরে পুলিশ এসে ওই কক্ষের ভেতরে আজিজুল হকের স্ত্রীর গলাকাটা বিবস্ত্র লাশ এবং বাথরুমে বস্তাবন্দি মাথাবিহীন সন্তানের লাশ দেখতে পান।
শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, সেনা সদস্য আজিজুল হক হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার দাবি সে তার সন্তানের মাথা পাশের করতোয়া নদীকে ফেলে দিয়েছে। নিহত শিশুর মাথা খোঁজা হচ্ছে।
নিহত আশামনির ভাই মেহেদি হাসান জানান, তার বোনের সঙ্গে ভগ্নিপতি আজিজুল হকের দাম্পত্য কলহ ছিল। তার ধারণা দাম্পত্য কলহের কারণেই তার বোন ও ভাগ্নেকে খুন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিয়ের সময় তারা ভগ্নিপতিকে মোটা অঙ্কের টাকা যৌতুক হিসেবে দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও তিনি নানা অজুহাতে টাকা চাইতেন।