কক্সবাজারের ঈদগাঁও থানাধীন ভাদিতলা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতির প্রস্তুতিরত ডাকাত দলের ০৯ জন ডাকাত’কে দেশীয় অস্ত্রসহ র্যাব-১৫ কর্তৃক গ্রেফতার
১। র্যাব-১৫, কক্সবাজার দায়িত্বপূর্ণ এলাকার অপরাধ নির্মূলে প্রতিনিয়ত অবদান রেখে চলেছে। দায়িত্বাধীন এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, জঙ্গী, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, জলদস্যু, ডাকাত, চুরি-ছিনতাই, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক, অপহরণ ও গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী গ্রেফতারসহ দেশে বিরাজমান নানাবিধ অপরাধ দমনে আন্তরিকতার সহিত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
২। সাম্প্রতিক সময়ে পর্যটন নগরী কক্সবাজারসহ জেলার অন্যান্য স্থানেও প্রায়ঃশই বিভিন্ন ডাকাত চক্র কর্তৃক ডাকাতি সংঘঠনের ঘটনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। র্যাব কর্তৃক এ সকল ঘটনাগুলো পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, উঠতি বয়সী কতিপয় কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা এ সকল ডাকাতির ঘটনাগুলোর সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে। দিনকে দিন তাদের অপরাধ বাড়তে থাকায় স্থানীয় জনসাধারণের নিরাপত্তাকল্পে এ সকল চক্রগুলোকে দমনে র্যাবের একাধিক আভিযানিক দল মাঠে নামে।
৩। সম্প্রতি কক্সবাজারের ঈদগাঁও থানাধীন ০৪নং ঈদগাঁও ইউনিয়নের ০৭নং ওয়ার্ডস্থ ভাদিতলা রফিক প্রকাশ পুতিকার মুদির দোকানের দক্ষিণ পাশে রাইটার মিজানের চিকনপাতা গাছ বাগানের ভিতর একটি ডাকাত দল ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে মর্মে তথ্য পায় র্যাব-১৫। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে রাত অনুমান ০১.৪০ ঘটিকার সময় র্যাব-১৫, ব্যাটালিয়ন সদরের একটি চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান পরিচালনাকালে উক্ত স্থানে আভিযানিক দলের উপস্থিতি বুঝতে পেরে ডাকাতদলের সদস্যরা তাদের হেফাজতে থাকা দেশীয় অস্ত্রসহ দিক-বিদিক রাতের আঁধারে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় ডাকাত দলটিকে ধাওয়া করে চক্রের নয়জন ডাকাত সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব এবং গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সাথে থাকা অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন সদস্য রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায় বলে জানা যায়। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃতদের হেফাজত হতে ০২টি কিরিচ, ০১টি লোহার রড, ০১টি লাঠি, ০২টি টর্চ লাইট, ০৯টি মোবাইল, নগদ ৩,১৯০/- টাকা এবং ০১ খন্ড রশি উদ্ধার করা হয়।
৪। গ্রেফতারকৃতদের বিস্তারিত পরিচয় :
১) আসিফুর রহমান আসিফ (২১), পিতা-মৃত আবুল কাশেম, মাতা-ফাতেমা বেগম, সাং-উলুবুনিয়া, ৪নং ওয়ার্ড, ডুলাহাজারা ইউনিয়ন, থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার।
২) মোঃ আব্দুল জলিল প্রকাশ কায়সার (২২), পিতা- মোঃ ইউসুফ মিয়া, মাতা- মছুদা বেগম, সাং- ডুমখালী, ০২নং ওয়ার্ড, ডুলাহাজারা ইউনিয়ন, থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার।
৩) আব্দুল্লাহ আল মুহিম (২০), পিতা- আজিজুর রহমান, মাতা-রেনুয়ারা বেগম, সাং-উলুবুনিয়া, ৪নং ওয়ার্ড, ডুলাহাজারা ইউনিয়ন, থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার।
৪) মোঃ নাহিম (২১), পিতা-মোঃ নেজাম উদ্দিন, মাতা-মৃত আনোয়ারা বেগম, সাং-উলুবুনিয়া, ৪নং ওয়ার্ড, ডুলাহাজারা ইউনিয়ন, থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার।
৫) সাজ্জাদ মিয়া (২১), পিতা-নুরুল আজম, মাতা-রেহেনা আক্তার, সাং- ডুমখালী, ০২নং ওয়ার্ড, ডুলাহাজারা ইউনিয়ন, থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার।
৬) শাহরিয়াজ ওসমান হৃদয় (২০), পিতা-মোঃ শওকত ওসমান, মাতা-রেহেনা আক্তার, সাং-উলুবুনিয়া, ৪নং ওয়ার্ড, ডুলাহাজারা ইউনিয়ন, থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার।
৭) মোঃ ইসমাইল উদ্দিন প্রকাশ গুরা মিয়া (২০), পিতা-মৃত মোজাফ্ফর আহম্মদ, মাতা-দিলুয়ারা বেগম, সাং- ডুমখালী, ০২নং ওয়ার্ড, ডুলাহাজারা ইউনিয়ন, থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার।
৮) আব্দুল মালেক প্রকাশ মালেক (২৪), পিতা-মোজাম্মেল হক, মাতা-রহিমা বেগম, সাং- ডুমখালী, ০২নং ওয়ার্ড, ডুলাহাজারা ইউনিয়ন, থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার।
৯) মোঃ পারভেজ (২৩), পিতা-মৃত নুর মোহাম্মদ, মাতা-ছকিনা বেগম, সাং-উত্তর নলবিলা, চালিয়াতলী, বালির ডেইল, ০১ নং ওয়ার্ড, কালামারছড়া ইউনিয়ন, থানা-মহেশখালী, জেলা-কক্সবাজার।
৫। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ডাকাত দলটি কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকার সমন্বয়ে গঠিত বলে জানা যায়। তাদের পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে একস্থানে একত্রিত হতো। পরবর্তীতে তাদের টার্গেটকৃত স্থানে দেশীয় অস্ত্রসহ অবস্থান গ্রহণ এবং পর্যটন নগরীতে ভ্রমণে আসা দেশী-বিদেশী পর্যটক ও স্থানীয় জনসাধারণকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাদের থেকে টাকা-পয়সা এবং মূল্যবান সামগ্রী ডাকাতি ও ছিনতাই করে থাকে। ঘটনার দিন তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক ঈদগাঁতে একত্রিত হয়ে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে ডাকাতির উদ্দেশ্যে প্রস্তুতিরত ছিল বলে স্বীকার করে। নানাবিধ অপরাধের সাথে জড়িত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা সংক্রান্তে তথ্য পাওয়া যায়।
৬। উদ্ধারকৃত আলামতসহ গ্রেফতারকৃত ডাকাত দলের সদস্যদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে কক্সবাজারের ঈদগাঁও থানায় এজাহার দাখিল করা হয়েছে।
—–ধন্যবাদ—–