সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে সমুদ্রপথে পার্শ্ববর্তী দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী পাচারকালে কক্সবাজার পৌরসভার উত্তর নুনিয়ারছড়াস্থ ৬নং বিআইডব্লিউটিএ জেটি ঘাট এলাকা থেকে র্যাব-১৫ কর্তৃক তিনজন পাচারকারী গ্রেফতার; বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী এবং ঔষধ উদ্ধার
১। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাংলাদেশে বিবিধ অপরাধ নির্মূলে প্রতিনিয়ত অবদান রেখে চলেছে। র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, জঙ্গী দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, জলদস্যু, ডাকাত, চুরি-ছিনতাই, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদকসহ দেশে বিরাজমান নানাবিধ অপরাধ দমনে নিরলসভাবে কাজ করছে।
২। কক্সবাজারের সমুদ্রের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও পাচারকারী জ্বালানী তৈলসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য ও ঔষধ সামগ্রী অবৈধভাবে চোরাচাইপথে পাশ্ববর্তী দেশে পাচার করছে। এতে করে একদিকে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। একই সাথে দেশীয় উপরোল্লিখিত খাদ্যদ্রব্য, অকটেন, ডিজেল ইত্যাদি দেশ হতে অন্য দেশে পাচার হওয়ার কারণে দেশে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পাচার রোধে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও তৎপরতা অব্যাহত থাকে।
৩। এ ধরণের গর্হিত অপরাধ রোধকল্পে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৫ জানতে পারে যে, একটি পাচারকারী চক্র কক্সবাজার সদর থানাধীন পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের উত্তর নুনিয়ারছড়াস্থ ৬নং ঘাট (বিআইডব্লিউটিএ জেটি) এর পাড় সংলগ্ন বাকখালী নদীতে এফবি তুসার নামীয় কাঠের তৈরী ০১টি ইঞ্জিন চালিত নৌকায় বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী এবং ঔষধ মজুদ করে অবৈধভাবে সমুদ্রপথে পার্শ্ববর্তী দেশের পাচারের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে গত ০৬ মে ২০২৪ তারিখ অনুমান ০৬.১০ ঘটিকার সময় র্যাব-১৫, সিপিএসসি ক্যাম্পের একটি চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে পৌঁছালে র্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে কৌশলে পলায়নের চেষ্টাকালে তিনজন পাচারকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে তাদের হেফাজতে থাকা এফবি তুসার নামীয় কাঠের তৈরী ০১টি ইঞ্জিন চালিত নৌকা জব্দ করতঃ উক্ত নৌকা হতে ৩৬০টি ডিম রাখার কেচে মোট ১৪,০০০ পিস ডিম, ০৮ বস্তায় মোট ৪০০ কেজি পেঁয়াজ, ০৮ বস্তায় মোট ৪০০ কেজি আলু, বিভিন্ন ব্যান্ডের ৮০০ পিস ছাতা, ৩১৮ বোতল সিরাপ জাতীয় ঔষধ, ৪১৪৮ পিস মিনি প্যাক শ্যাম্পু উদ্ধার করা হয়।
৪। গ্রেফতারকৃত পাচারকারীদের বিস্তারিত পরিচয় :
১) মোঃ হোসেন মাঝি (৪৫) পিতা-মৃত সৈয়দুল হক, সাং-পূর্ব লালপাড়া, ইউনিয়ন-আলীকদম, থানা-লামা, জেলা-বান্দরবান।
২) মোঃ ফিরোজ (৫৫), পিতা-মৃত আব্দুল মোতালেব, সাং-পেশকারপাড়া, মজিদ মৌলভীর কলোনী, কক্সবাজার পৌরসভা, থানা-সদর, জেলা-কক্সবাজার।
৩) মোঃ হাবিবুর রহমান (৫৮), পিতা-মোঃ আঃ গফুর, সাং-বাহেলা, ২নং ওয়ার্ড, রামপুর ইউনিয়ন, থানা-ফুলপুর, জেলা-ময়মনসিংহ, বর্তমানে-হাঙ্গরপাড়া, হাবির কলোনী, জনতা রোড, ৪নং ওয়ার্ড, কক্সবাজার পৌরসভা, থানা-সদর, জেলা-কক্সবাজার।
৫। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থান হতে পাইকারি দামে বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী ক্রয় করে নিজেদের হেফাজতে মজুদ করে থাকে। পরবর্তীতে মজুদকৃত মালামাল সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে সমুদ্রপথে পার্শ¦বর্তী দেশে পাচার করে থাকে বলে জানায়।
৬। উদ্ধারকৃত আলামতসহ গ্রেফতারকৃত পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে কক্সবাজার সদর থানায় এজাহার দাখিল করা হয়েছে।
—–ধন্যবাদ—–