১ লাখ টাকা না দেয়ায় এক যুবকের বিরুদ্ধে ৪টি মোটরসাইকেল চুরির মামলা দিয়েছে তালাইমারী ফাড়ীর আইসি ও চন্দ্রিমা থানার ওসি। এমনই অভিযোগ ভুক্তভোগীর। ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মোসাঃ মায়া বেগম বাদী হয়ে আরএমপি চন্দ্রিমা থানার (ওসি) মোঃ মাববুবুর রহমান ও তালাইমারী পুলিশ ফাঁড়ির আইসির বিরুদ্ধে আরএমপি পুলিশ কমিশনার, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ও মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগের বরাত দিয়ে দিয়ে জানা যায়, গত ৪ মার্চ মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে মোসাঃ মায়া বেগমের ছেলে মাহমুদুল হাসান প্রেম (১৯), মোঃ আশিক আহমেদ জিসান (২৪) ও মোঃ শিমুলকে (২১), আটক করে বাঘা থানা পুলিশ। এদিন হাজতে গিয়ে ভুক্তভোগী অপর দুই আসামীকে জিজ্ঞাসা করেন তোমাদের সাথে আমার ছেলে মাহমুদুল হাসান প্রেম জড়িত কি? তারা দু’জনে সাফ জানায়, প্রেম আমাদের সাথে ছিলো না। এ সময় আসামীদের বক্তব্য গোপনে মোবাইলে ভিডিও ধারন করেন তিনি। পরের দিন (৫ মার্চ) রাজশাহী নগরীর আরএমপি চন্দ্রিমা থানায় আসামীদের নিয়ে আসেন চন্দ্রিমা থানার তালাইমারী ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই প্লাবন ও সঙ্গীয় ফোর্স। এ ঘটনায় আমি আমার স্বামীকে নিয়ে মামলার বাদী মোঃ আব্দুর রহিমের সাথে চন্দ্রিমা থানার সামনে কথা বলি।
বাদি বলেন, আমার একটি আরটিআর মোটরসাইকেল গত ৪মার্চ সন্ধ্যায় আমার বাড়ীর সামনে থেকে চুরি হয়েছে। তবে চুরির সাথে জড়িত কাউকে দেখিনি। থানা থেকে বেরিয়ে এসআই প্লাবনকে হাতে পায়ে ধরে অনুরোধ করে বলি, ভাই আমার ছেলে নির্দোষ দয়া করে তাকে ছেড়ে দিন।
এসআই প্লাবন সাফ জানায়, ওসি মাহবুব স্যারের সাথে কথা বলেছি ১লাখ টাকা দিলে আপনার ছেলেকে ছোট মামলা দিবে। কাল আদালত থেকে জামিন নিয়েন। আমি তাকে ৫০হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলি। এসআই প্লাবন বলেন ১লাখ টাকার কম হলে হবে না। এরপর আমি ওসির অফিসে গিয়ে হাতে পায়ে ধরে ছেলেকে বাঁচাতে অনুরোধ করি।
ওসি বলেন, সাংবাদিকরা ছবি তুলেছে, তাই ছাড়া সম্ভব না। ওইদিন রাতে আমার ছেলেকে ছাড়ানোর লক্ষ্যে অনেক ছুটাছুটি করে ৬০ হাজার টাকা ম্যানেজ করি। তা নিয়েই তালাইমারী ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই প্লাবনের নিকট গিয়ে বলি ভাই এই ৬০ হাজার টাকা নিয়ে আমার ছেলেকে মুক্তি দেন। কিন্তু তিনি কোনভাবেই মানেন নি।
এছাড়াও আমার ছেলেকে মারবে না অঙ্গিকার করে (৪ মার্চ) বাঘা থানায় মোটরসাইকেল মলিকের হাত দিয়ে প্লাবনকে ২০হাজার টাকা দেই। সেই ভিডিও আমার সংগ্রহে আছে। আমার ছেলে প্রেমের নামে অতিতে কখনই কোন মামলা ছিলো না। অথচ এই মামলার জেল হাজতে প্রেরণের পর আরও তিনটি মামলা আমার ছেলের নামে দেয়া হয়েছে। কিন্ত আমার ছেলের বিরুদ্ধে বাদীর কোন অভিযোগ নাই এবং তিনি ৩০০টাকা মূল্যের স্ট্যাম্পে মামলা এফিডেভিট করে দিয়েছেন। ইতিপূর্বে আমার ছেলের নামে কখনই কোন মামলা ছিলো না।
তিনি আরও বলেন, আমার ছেলের মামলার বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে এবং চাহিদা মাফিক টাকা দিতে না পারায় আমার ছেলেকে আরএমপি’র চন্দ্রিমা থানা অসাধু ওসি মাহবুবুর রহমান ও তালাইমারী ফাঁড়ী ইনচার্জ এসআই প্লাবনের বিরুদ্ধে শাস্তির জোর দাবিতে আরএমপি পুলিশ কমিশনার, বাংলাদেশ পুলিশের মহা-পরিদর্শক ও মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি।
এ ব্যাপারে তালাইমারী পুলিশ ফাাঁড়ির এসআই প্লাবনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা দাবির বিষয়টি অস্বিকার করেন। বাঘা থানায় ২০ হাজার টাকা নিয়েছেনম ভিডিও আছে। এমন প্রশ্নে জবাব তিনি এড়িয়ে যান।
চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, এটা সম্পুর্ণ প্লাবনের বিষয়। আমার বিরুদ্ধে যেহেতু পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে অভিযোগ করা হয়েছে এটা এখন তদন্তের বিষয়। এছাড়া আমার কোন বক্তব্য নেই।