চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশীতে হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর রক্তাক্ত জখম মামলার অন্যতম প্রধান আসামি ‘‘সুজন গ্রুপ’’ নামক কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান মোঃ সুজন (২৫)’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম
বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ আনুমানিক ১৫০০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম মহানগরীর ওয়াসা মোড়স্থ খাজা পেট্রোল পাম্পের সামনে জনাব মোঃ মহিউদ্দিন বাচ্চু’র নির্বাচনী লিপলেট বিতরণ করাকে কেন্দ্র করে ভিকটিমের ভাগিনার সাথে ‘‘সুজন গ্রুপ’’ নামক কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ভিকটিমের ভাগিনা ইফতেখার হোসেন (১৮)’কে ‘‘সুজন গ্রুপ’’ এর সদস্যরা চড়-থাপ্পড় মারে। উক্ত ঘটনার খবর পেয়ে ভিকটিম মোঃ আজিজ উদ্দিন চৌধুরী ঘটনাস্থালে উপস্থিত হয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়ে বাসায় চলে যায়। পরবর্তীতে একই তারিখ আনুমানিক ১৫৫৫ ঘটিকায় ভিকটিম আছরের নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বাসা হতে বাহির হয়ে খুলশী থানাধীন ওয়াসা মোড়স্থ অগ্রণী ব্যাংকের সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌচ্ছালে মোঃ সুজন এর নেতৃত্বে ৮/১০ জন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ভিকটিমের ভাগিনার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরি, লোহার রড ও লাঠিশোটা নিয়ে ভিকটিমের পথরোধ করে। এসময় সন্ত্রাসী মোঃ সুজন হত্যার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের বুকের বাম পাশে, পেটে এবং কোমড়ে দাড়ালো ছুড়ি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। ভিকটিমের চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করলে আহত ভিকটিম মোঃ আজিজ উদ্দিন চৌধুরীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
উক্ত হামলার ঘটনায় ভিকটিম মোঃ আজিজ উদ্দিন চৌধুরী বাদি হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী থানায় ৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং-০১, তারিখ ০১ জানুয়ারি ২০২৪ইং, ধারা-১৪৩/৩৪১/৩২৩/ ৩২৪/৩২৬/ ৩০৭/৫০৬ পেনাল কোড ১৮৬০। মামলা দায়ের হওয়ার পর আসামিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
বর্ণিত মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত মামলার এজাহার নামীয় অন্যতম প্রধান পলাতক আসামি এবং ‘‘সুজন গ্রুপ’’ নামক কিশোর গ্যাং গ্রুপের প্রধান মোঃ সুজন চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী থানাধীন কালুর মার কলোনী এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল অদ্য ০৬ এপ্রিল ২০২৪ইং তারিখ আনুমানিক ১১৩০ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি মোঃ সুজন (২৫), পিতা-মৃত নুরুল ইসলাম, সাং-লালখান বাজার, থানা-খুলশী, জেলা-চট্টগ্রাম মহানগরীর’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত মামলার পলাতক আসামি মর্মে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।