আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর’কে কেন্দ্র করে ছিনতাই এবং চাঁদাবাজি ০৬টি কিশোর গ্যাং গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭
আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর’কে কেন্দ্র করে ছিনতাই এবং চাঁদাবাজি প্রতিরোধে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা হতে ০৬টি কিশোর গ্যাং গ্রুপের গ্রুপ প্রধানসহ ৩৩ জন সংক্রিয় সদস্য’কে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের দায়িত্বপূর্ণ এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় র্যাবের নিয়মিত টহল এবং সাদা পোষাকে গোয়েন্দা নজরধারী বৃদ্ধি করা হয়েছে, যাতে জনসাধারণ নির্বিঘ্নে ঈদের কেনাকাটা ও বাড়িতে যাতায়াত করতে পারে। এছাড়াও ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে ঘরমুখো মানুষ যেন নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে তাদের বাড়িতে পৌঁছাতে পারে সেজন্য র্যাব-৭ চট্টগ্রাম এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম চাঁদাবাজদের হাতেনাতে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গত ২৭ মার্চ ২০২৪ইং মধ্যরাত হতে অদ্য ২৮ মার্চ ২০২৪ইং তারিখ সকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাই এবং চাঁদাবাজির প্রাক্কালে ০৬টি কিশোর গ্যাং এর গ্রুপ প্রধানসহ সর্বমোট ৩৩ জন কিশোর গ্যাং এর সংক্রিয় সদস্য’কে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ আটক করতে সক্ষম হয়।
অভিযানের বিস্তারিত তথ্য নিম্নরুপঃ
চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন ফরেষ্টগেট রেল ক্রসিং এলাকা হতে “রুবেল গ্রুপ” নামক কিশোর গ্যাং এর প্রধান রুবেলসহ ০৬ জন কিশোর গ্যাং এর সংক্রিয় সদস্যকে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা বর্ণিত এলাকায় চলাচলরত পথচারীদের দেশীয় অস্ত্রের মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ এবং মোবাইল ফোন ছিনাতাই করে আসছিল।
চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকা হতে “জনি গ্রুপ” নামক কিশোর গ্যাং ০৫ জন সংক্রিয় সদস্য’কে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামীগণ পরষ্পর একে অন্যের সাথে যোগসাজশে ডাকাতির উদ্দেশ্যে সমবেত হয়ে বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকাসহ চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ ডাকাতি ও ছিনতাই করে আসছে।
এছাড়াও তারা সাধারণ মানুষসহ প্রত্যহিক চলাচলরত বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনতাই করে আসছিল।
চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন মোহাম্মদপুর এয়ার বিল টাওয়ার এলাকায় “বাচা গ্রুপ” নামক কিশোর গ্যাং এর গ্রুপ প্রধান বাচা মিয়া @ বাচা সোহেল এর নেতৃতে ছিনতাই এবং ডাকাতির প্রস্তুুতি কালে ০৫ জন কিশোর গ্যাং এর সংক্রিয় সদস্য’কে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, তারা পরষ্পর যোগাযোগক্রমে ডাকাতির উদ্দেশ্যে বর্ণিত এলাকায় সমবেত হয় এবং দীর্ঘদিন যাবৎ চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি ও ছিনতাই করে আসছিল।
চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানাধীন ১২ কোয়ার্টার এলাকা হতে ডাকাতির প্রস্তুুতি কালে কিশোর গ্যাং “সাজ্জাদ গ্রুপ” এর সংক্রিয় ০৭ জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা পরষ্পর যোগসাজশে ডাকাতির উদ্দেশ্যে বর্ণিত এলাকায় একত্রিত হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় চক্রটি চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী এলাকাসহ শহরের অন্যান্য এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ ডাকাতি ও ছিনতাই করে আসছে। এছাড়াও প্রাত্যহিক চলাচলরত সাধারণ পথচারী, পোশাক শ্রমিক, ভ্রাম্যমাণ দোকানসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনাতাই এর উদ্দেশ্যে বর্ণিত এলাকায় একত্রিত হয় মর্মে স্বীকার করে।
চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানাধীন সরাইপাড়া এলাকা হতে ডাকাতির প্রস্তুুতি কালে কিশোর গ্যাং “সাকিব গ্রুপ” এর গ্রæপ প্রধানসহ সংক্রিয় ০৬ জন’কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা পরষ্পর একে অন্যের সাথে যোগসাজশে ডাকাতির উদ্দেশ্যে সমবেত হয়ে পাহাড়তলী থানা এলাকাসহ চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ ডাকাতি ও ছিনতাই করে আসছে। এছাড়াও প্রাত্যহিক চলাচলরত সাধারণ পথচারী, পোশাক শ্রমিক, ভ্রাম্যমাণ দোকানসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনাতাই এর উদ্দেশ্যে বর্ণিত এলাকায় একত্রিত হয় মর্মে স্বীকার করে।
চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং থানাধীন পাহাড়তলী সরাইপাড়া এলাকা হতে ডাকাতির প্রস্তুুতি কালে কিশোর গ্যাং “বিপুল গ্রুপ” এর গ্রুপ প্রধানসহ সংক্রিয় ০৪ জন’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা পরষ্পর একে অন্যের সাথে যোগসাজশে ডাকাতির উদ্দেশ্যে সমবেত হয়ে ডবলমুরিং থানা এলাকাসহ চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ ডাকাতি ও ছিনতাই করে আসছে। এছাড়াও প্রাত্যহিক চলাচলরত সাধারণ পথচারী, পোশাক শ্রমিক, ভ্রাম্যমাণ দোকানসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনাতাই এর উদ্দেশ্যে বর্ণিত এলাকায় একত্রিত হয় মর্মে স্বীকার করে।
সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেফতারকৃত ৩৩ জন কিশোর গ্যাং সদস্যদের মধ্যে ০৫ জনের নামে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি এবং ডাকাতির সর্বমোট ০৮টি মামলার তথ্য পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামি এবং উদ্ধারকৃত আলামত সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।