বদলে দেওয়া কুষ্টিয়া ভূমি অফিসের সেবার অধিনায়ক দবির উদ্দিনের পদোন্নতি
বদলে দেওয়া কুষ্টিয়া ভূমি অফিসের সেবার অধিনায়ক দবির উদ্দিন পদোন্নতি লাভ করেছেন। কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) থেকে পদোন্নতি লাভ করে তিনি ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে যোগ দিয়েছেন।
এরআগে গতকাল তার বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।
হয়রানি অথবা সময় বাঁচানোর কথা বলে প্রায়ই তৃতীয় পক্ষ হিসেবে বিভিন্ন দালালের কাছে নিজের জমির বিষয়াদি গছিয়ে দিই। ফলশ্রুতিতে নিজের জমির কোনো ত্রুটি থাকলে সেটা জানা সম্ভব হয়না এবং জমি বিষয়ে সবসময়ই অজানা থেকে যায়। অজ্ঞতার এ দুষ্টুচক্র থেকে বের হওয়া অত্যন্ত কঠিন। তাই নিজের জমির বিষয়ে যথাসম্ভব নিজে কার্যক্রম সম্পাদনের চেষ্টা করতে সকল ভুমি মালিককে অনুরোধ জানিয়েছেন
তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগ দিয়েই যেকোনো অপপ্রচার সম্পর্কে সচেতন হতে এবং হয়রানি বন্ধে যেকোন অভিযোগ থাকলে সরাসরি তিনি এসিল্যান্ডকে জানাতে তার মোবাইলে (০১৭৩০৪৭৩৬৩২) নাম্বারে যোগাযোগ করতেও অনুরোধ করেন তিনি।
তিনি জানান, দালালেরা সবসময় অপপ্রচার করে যে টাকা ছাড়া কাজ হয় না ফাইল আটকে থাকে। এই অপপ্রচার না করলে তাদের অবৈধ আয় বন্ধ হয়ে যাবে। ভূমি অফিসগুলোর দীর্ঘ দিনের জীর্ণতা আর দৈন্যতাকে পিছনে ঝেড়ে ফেলে নতুন উদ্যোমে ভূমি ব্যবস্থাপনা ও অফিস সিষ্টেম সংস্কারের ব্রত নিয়েই কাজ করেছেন। ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন এই কর্মকর্তার কাছে সেবা প্রত্যাশীরা অনেক বেশি খুশী হয়েছিলো।
যেখানে ভূমি অফিস মানেই ভোগান্তি, টাকার ছড়াছড়ি। সাধারণ মানুষের হয়রানি আর অসহায়তার জায়গা। সেখানে একটি স্বচ্ছ, ঘুষবিহীন ও জবাবদিহিতামূলক সেবাকার্যক্রম পাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন দবির উদ্দিন। তার নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সব নৈরাজ্য দূর হয়ে সেখানে তৈরি হয়েছিলো আস্থার পরিবেশ।
এসিল্যান্ড দবির উদ্দিন যোগদানের পর থেকে তার ইতিবাচক মনোভাবের কারণে উপজেলা ভূমি অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাব দেখা গেছে। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রয়েছে অভিযোগ বক্স ও নিয়মিত তদারকি ব্যাবস্থা এবং সরাসরি অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত সমস্যা সমাধানকরন কার্যক্রম। তাছাড়া এসিল্যান্ড অফিসে অফিসের সুন্দরয্য বধার্য়ন, সিটিজেন চার্টার ও জনসচেতনামূলক বিভিন্ন লিফলেটসহ নানা কার্যক্রম দেখা গেছে।
এসিল্যান্ড দবির উদ্দিনের নেতৃত্বে উপজেলার বেদখলকৃত সরকারি জমি উদ্ধার হয়েছে। মিসকসে (নামজারি জমাভাগ খারিজ সংক্রান্ত) মামলা শুনানির মাধ্যমে খুব কম সময়ে নিষ্পত্তি করেন। সরকারি খাস জমি, খাস পুকুর রক্ষায়,বাল্যবিবাহ বন্ধ করনে সবসময় তৎপর রয়েছেন। তিনি যোগদানের পর থেকে ভূমি অফিসকে দালালমুক্ত করে গতিশীল করেছেন।
এছাড়া এই কর্মকর্তা জমিসংক্রান্ত সব ধরনের সেবাগ্রহিতার অধিকার নিশ্চিত করে সবার কাছে ভূমি অফিসকে সহজ, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও গ্রহণযোগ্য করে গড়ে তুলেছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অবৈধ বালু উত্তোলনসহ ভেজালবিরোধী অভিযান গতিশীল করেছেন। জনগণের সেবা প্রাপ্তির বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করেন। অফিসের নথি ব্যবস্থাপনা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধিসহ জনগণের সেবা প্রাপ্তির বিষয়টিকে বেশি সমৃদ্ধ করেছেন।
অফিস টাইম সকাল ৯টা হতে বিকাল ৪টা পর্যন্ত আগত ভূমি মালিকদের সমস্যা আন্তরিকতার সাথে শুনে তাৎক্ষনিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করেছেন। পাশাপাশি সপ্তাহে একদিন আনুষ্ঠানিকভাবে ও গণশুনানী নিয়ে তাৎক্ষনিক প্রতিকারের চেষ্টা করেন তিনি। এমন অসংখ্য ভালো কাজ করে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হন সদ্য বিদায়ী এ ভূমি কর্মকর্তা।
এরই ফলশ্রুতিতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে উপজেলার এই সহকারী কমিশনার (ভূমি) এখানে সবার কাছে প্রিয় কর্মকর্তা হয়ে উঠেছিলেন। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রিয় হয়ে ওঠেন। গেলো বছর খুলনা বিভাগের মধ্যে শ্রেষ্ঠ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে সম্মাননা লাভ করেন তিনি। এরআগে তিনি মাগুরা জেলার শ্রেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র সম্মাননা লাভ করেন।