রাজধানী ঢাকার খিলক্ষেত থানার পাতিরা এলাকা হতে রূপগঞ্জ থানার পূর্বাচলে বহুল আলোচিত কিশোরী গণধ*র্ষণের মূল হোতা ফাহিম হাসান দিহান (১৮)কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সবসময় বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে এ পর্যন্ত অপহরণকারী, সন্ত্রাসী, এজাহারনামীয় আসামী, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, প্রতারকচক্র, ধর্ষণকারী, পর্ণোগ্রাফি বিস্তারকারী, চোরাকারবারীদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
গত ০৩ ফেব্রুয়ারি তারিখ রাতে পূর্বাচলের ময়েজ উদ্দিন চত্ত¡রে একটি কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়। ঐ তারিখ রাত ০৯০০ ঘটিকায় ভিকটিম তামান্না আক্তার মিম (২৩)’কে তার চাচাতো ভাই সাব্বির (১৯) কনসার্টে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। বারবার অনুরোধ করায় ভিকটিম তামান্না আক্তার মিম (২৩) তার চাচাতো ভাইয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়।
রাত আনুমানিক ১০.০০ ঘটিকার দিকে উক্ত ভিকটিম সহ সাব্বির কনসার্টে হাজির হয়। কনসার্ট চলাকালীন ধর্ষক সাব্বির ও আনাস কাজী তাদের অন্যান্য সহযোগীদের সাথে শলাপরামর্শ করতঃ কিশোরীকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে।
তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক কনসার্ট শেষ হলে রাত আনুমানিক ১২.৪০ (০৪-০২-২০২৪) ঘটিকায় ধৃত আসামী দিহান তার প্রাইভেট কার নিয়ে আসে।
উক্ত কারে দিহান, শাকিল, জাহিদ ওরফে শুভ, সালমান এবং আরাফাত অবস্থান করে। সাব্বির একটি মোটরসাইকেল যোগে ভিকটিম’কে কনসার্ট এলাকা থেকে একটু দূরে নিরিবিলি জায়গায় নিয়ে আসে। আসামী দিহান তার প্রাইভেট কারে শাকিল, জাহিদ, সালমান ও আরাফাতকে নিয়ে সাব্বিরের মোটরসাইকেলের নিকট নিকট হাজির হয়।
সেখানে পৌঁছে তারা ০৭ জন আবার পরামর্শ করে এবং ভিকটিম’কে প্রাইভেট কারের পিছনে বসায়। অল্প কিছুক্ষণ আসামী সাব্বির ও আনাস কাজী ভিকটিমের সাথে কথাবার্তা বলে। একপর্যায়ে তারা জোরপূর্বক কিশোরীর পরিধেয় বস্ত্র খুলে ফেলে এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে।
উক্ত ০৭ জন আসামীরা তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। রাত অনুমান ০২.৩০ ঘটিকা পর্যন্ত ভিকটিমের উপর পাশবিক অত্যাচার চালায়। অপরাধীরা তাদের পশুবৃত্তি চরিতার্থ করে বিধ্বস্ত ভিকটিমে’কে অতঃপর তার বাড়ীতে পৌঁছে দেয়।
এ সংক্রান্তে ভিকটিম তামান্না আক্তার মিম (২৩) বাদী হয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ইং তারিখ নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করে, যার মামলা নম্বর-২৩ তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ধারা- ৯(৩)/৩০ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধনী ২০০৩।
এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-১ বর্ণিত গণধর্ষণ মামলার অপরাধীদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ রাতে র্যাব-১ এর আভিযানিক দল রাজধানী ঢাকা খিলক্ষেত থানাধীন পাতিরা এলাকা হতে ধর্ষণ মামলার মূল হোতা মোঃ ফাহিম হাসান দিহান (১৮), পিতা- ইব্রাহিম মিয়া, থানা- খিলক্ষেত, জেলা- ঢাকা’কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে বর্ণিত গণধর্ষণের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
পরবর্তীতে উপরিউক্ত গ্রেফতারকৃত আসামীকে নারায়ণগঞ্জ জেলা রূপগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়।