রাজধানীর বিভিন্ন কিশোর গ্যাং গ্রুপের ৫০ সদস্য গ্রেফতার
র্যাব-১০ এর একাধিক অভিযানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও কেরাণীগঞ্জ এলাকা হতে টপবাজ গ্রুপ, গ্যাং স্টার প্যারাডাইস, বয়েস হাই ভোল্টেজ, দে-দৌড়, হ্যাচকা টান ও বুস্টার গ্রুপসহ বিভিন্ন কিশোর গ্যাং গ্রুপের ৫০ জন গ্রেফতার।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব নিয়মিত জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, অস্ত্রধারী অপরাধী, মাদক ব্যবসায়ী, ছিনতাইকারী ডাকাতিসহ বিভিন্ন কিশোরগ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছে। র্যাবের এই অভিযানিক কার্যক্রম ইতোমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে কিশোর গ্যাং কালচার সারাদেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে কিশোররা জড়িয়ে পড়ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরণও পাল্টে যাচ্ছে যেমন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা ও নাশকতা থেকে শুরু করে হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিশোররা। বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে কিশোররা দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে এমনকি হিরোইজম প্রকাশ করতেও কিশোররা পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাং কালচার গড়ে তুলছে। বিগত এক বছরে র্যাবের অভিযানে ৩৪৯ জন কিশোর গ্যাংয়ের বিভিন্ন গ্রুপের সদস্যদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে র্যাব। উক্ত কিশোর গ্যাং নির্মূলে র্যাবের অভিযান ও গোয়েন্দা নজরদারী অব্যহত রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ র্যাব-১০ এর একাধিক আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী ও কেরাণীগঞ্জ এলাকায় একাধিক অভিযান পরিচালনা করে টপবাজ গ্রুপের রাব্বি, গ্যাং স্টার প্যারাডাইস গ্রুপের- ইউসুফ, বয়েস হাই ভোল্টেজ গ্রুপের- সাইফুল, দে-দৌড় গ্রুপের- মাইদুল, হ্যাচকা টান গ্রুপের- শাহাদাৎ ও বুস্টার গ্রুপসহ বিভিন্ন কিশোর গ্যাং গ্রুপের ৫০ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের নাম ১। মোঃ শাহাদাত হোসেন (৪৪), ২। মোঃ রাজিব হাওলাদার (২৭), ৩। শাওন দাস (২১), ৪। মোঃ আশরাফুল (১৯), ৫। মোঃ ইভান (২১), ৬। মোঃ তাইজুল ইসলাম (২১), ৭। মোঃ আলম হোসেন (১৯), ৮। মোঃ সুজাল হোসাইন রিমন (১৯), ৯। মোঃ রতন (৩৬), ১০। মোঃ জুয়েল (২৮), ১১। মোঃ রায়হান খাঁন (২২), ১২। অদিত খান লিমন (২৪), ১৩। মোঃ সাইফুল ইসলাম (২৭), ১৪। গোলাম রাব্বি (২৫), ১৫। মাইদুল ইসলাম (২২), ১৬। মোঃ ইমরান মোল্লা (২৩), ১৭। মোঃ নাঈম (১৯), ১৮। মোঃ হাসান (২১), ১৯। মোঃ শাহজাহান (৪২), ২০। মোঃ আল আমিন (৩৬), ২১। মোঃ সিরাজুল ইসলাম (২৮), ২২। মোঃ মহসিন (৩০), ২৩। মোঃ রাজা (২৮), ২৪। খলিলুর রহমান মিলন (২৫), ২৫। আবু বক্কর সিদ্দিক (২৮), ২৬। মৃদুল (২২), ২৭। মোঃ ইউসুফ (২৮), ২৮। মোঃ রাশেদুল হাসান সাঞ্জু (২৩), ২৯। মোঃ ইব্রাহীম (২৮), ৩০। মোঃ হাবিব আহম্মেদ হিরা (১৯), ৩১। মোঃ সজিব (১৯), ৩২। মোঃ আবির হোসেন (১৭), ৩৩। মোঃ শাকিব সিকদার (২৫), ৩৪। মোঃ হৃদয় (২২), ৩৫। মোঃ শান্ত (২১), ৩৬। সাব্বির হোসেন সিয়াম (১৮), ৩৭। মোঃ শাহিন (১৮), ৩৮। মোঃ ইমরান হোসেন রিফাত (১৮), ৩৯। সজীব (২১), ৪০। মোঃ ফেরদৌস (২১), ৪১। রাসেল (৪০), ৪২। মোঃ আরজু (৪২), ৪৩। মোঃ শাকিল (১৯), ৪৪। মোঃ সাগর (৩৫), ৪৫। মোঃ আলামিন (৩৪), ৪৬। মোঃ বিল্লাল হোসেন (২৬), ৪৭। মোঃ রুমান মিয়া (২৪), ৪৮। মোঃ রাসেল সর্দার (২৫), ৪৯। মোঃ বিপ্লব হোসেন (২৬) ও ৫০। মোঃ আসিফ (১৯) বলে জানা যায়। এসময় তাদের নিকট হতে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মারামারি ও হত্যা চেষ্টাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে ব্যবহৃত দেশীয়
অস্ত্র (১১টি লাঠি, ১৭টি চাকু, ০৫টি ছোড়া, ০১টি সুইচ গিয়ার চাকু, ০১টি ছুরি, ০১টি চাপাতি, ০১টি চাইনিজ কুড়াল ও ০১টি ইলেক্ট্রিক শক দেওয়ার মেশিন) উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা চেষ্টা এবং পাড়া মহল্লায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন প্রকার অপরাধমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১৫ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক, অস্ত্র, ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।