চোরাইপথে পার্শ্ববর্তী দেশে অকটেন পাচারকালে দুই রোহিঙ্গাসহ গ্রেফতার-০৩
সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে চোরাইপথে পার্শ্ববর্তী দেশে অকটেন পাচারকালে কক্সবাজারের টেকনাফ থানাধীন বরইতলী এলাকা থেকে র্যাব-১৫ কর্তৃক দুই রোহিঙ্গাসহ তিনজন পাচারকারী গ্রেফতার; ০১টি ড্রাম্পার গাড়িসহ ২৪টি ড্রামে সর্বমোট ১২০০ লিটার অকটেন উদ্ধার করা হয়।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাংলাদেশে বিবিধ অপরাধ নির্মূলে প্রতিনিয়ত অবদান রেখে চলেছে। র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় হত্যা, ধ*র্ষণ, অপহরণ, জঙ্গী দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, জলদস্যু, ডাকাত, চুরি-ছিনতাই, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদকসহ দেশে বিরাজমান নানাবিধ অপরাধ দমনে নিরলসভাবে কাজ করছে।
কক্সবাজারের সমুদ্রের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও পাচারকারী জ্বালানী তৈলসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য ও ঔষধ সামগ্রী অবৈধভাবে চোরাচাইপথে পাশ্ববর্তী দেশে পাচার করছে। এতে করে একদিকে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। একই সাথে দেশীয় উপরোল্লিখিত খাদ্যদ্রব্য, অকটেন, ডিজেল ইত্যাদি দেশ হতে অন্য দেশে পাচার হওয়ার কারণে দেশে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পাচার রোধে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়।
এ ধরণের গর্হিত অপরাধ রোধকল্পে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৫ জানতে পারে যে, অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের লক্ষ্যে কতিপয় চোরাকারবারী একটি ডাম্পার যোগে জ্বালানী তেল জাতীয় দ্রব্যাদি পরিবহন করে টেকনাফ থেকে কেয়ারি ঘাটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেছে। বর্ণিত সংবাদের ভিত্তিতে ১৪/০২/২০২৪ তারিখ অনুমান ০১.৩০ ঘটিকার সময় র্যাব-১৫, সিপিসি-১ টেকনাফ ক্যাম্পের চৌকস আভিযানিক দল টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বরইতলী এলাকার বাইতুর রহমান জামে মসজিদের সামনে টেকনাফ-কক্সবাজারগামী সড়কের পাকা রাস্তার উপর চেকপোস্ট স্থাপনপূর্বক তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় টেকনাফ হতে কেয়ারি ঘাটগামী ০১টি ডাম্পার গাড়ি (রেজিঃ নং-চট্টমেট্রো-অ ১১-০০৭৯) চেকপোস্টের নিকটে পৌঁছালে র্যাবের আভিযানিক দলের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পলায়নের চেষ্টাকালে তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত পাচারকারীরা তাদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে এবং তারা দেশের বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প হতে অকটেন সংগ্রহ করে অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের জন্য ড্রাম্পার যোগে কেয়ারি ঘাটের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিল বলে স্বীকার করে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে তাদের হেফাজতে থাকা ডাম্পার গাড়িসহ সর্বমোট ১২০০ (এক হাজার দুইশত) লিটার অকটেন উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১,৫৬,০০০/- (এক লক্ষ ছাপ্পান্ন হাজার) টাকা।
গ্রেফতারকৃত পাচারকারীদের বিস্তারিত পরিচয় :
১) জসিম উদ্দিন (৩২), পিতা-মমতাজ মিয়া, সাং-মোছনী (নয়াপাড়া, মমতাজ মিয়ার বাড়ি), ০৯ নং ওয়ার্ড, হ্নীলা ইউনিয়ন, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।
২) শফিউল্লাহ (৩৭) (রোহিঙ্গা), পিতা-মৃত নুর আহমদ, ব্লক-ই, নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড ক্যাম্প, (বর্তমানে ঘর-৮৮, ব্লক-সি/১২, ক্যাম্প-২৭), থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।
৩) নূর হোসেন (২৪) (রোহিঙ্গা), পিতা-আব্দুল কুদ্দুছ, ব্লক-বি, নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড ক্যাম্প, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প হতে পরস্পর যোগসাজসে পাইকারি দামে ক্রয় করে থাকে। পরবর্তীতে অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে চোরাইপথে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মজুদ এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে রাতের গভীরে মজুদকৃত জ্বালানী তেল অকটেন চোরাচাইপথে পাশ্ববর্তী দেশে পাচার করছিল বলে জানায়।
গ্রেফতারকৃত পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।